কয়েক দিন ধরে মনের ভেতরের পাখা-ছড়ানো রঙগুলো ধূসর হয়ে যাচ্ছে, মনটা ছোঁয়ালাগা লজ্জাবতীর পাতার মতো কুঁকড়ে যাচ্ছে। লাজ নেই তবুও গাছ লজ্জাবতী, একটুতেই কুঁকড়ে যায়। কিন্তু আমার তো লাজ আছে, এ লাজ তো আমি লুকাতে পারি না। এ লাজ শিক্ষক হওয়ার লাজ। গর্ব করে এখন নিজকে শিক্ষক পরিচয় দিতে কুণ্ঠা বোধ করি। ভয় পাই, যদি না কোনো শিক্ষার্থী জিজ্ঞেস করে বসে- আপনি তো শিক্ষক, আপনিও কি প্রশ্ন ফাঁস করেন?
সংবাদপত্রের পাতা ওল্টালেই দেখি কোনো না কোনো পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে- প্রাথমিক সমাপনী অথবা মাধ্যমিক কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার। এর সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস। একেবারে ষোলকলায় পূর্ণ। ফাঁস করা প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে ‘ভালো’ ফল ‘অর্জন’ করবে। এ ভালো ফলে ‘বিচি’ থাকবে না বিধায় এটিতে কখনও অঙ্কুরোদগম হবে না। আর তাই নিরুপায় হয়ে ভালো ফলধারী আমার ছেলে বা মেয়েটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গিয়ে নগদ অর্থের সঙ্গে অরিজিনাল সনদপত্র. মার্কসিট ইত্যাদি জমা দিয়ে স্পেশাল ডিভাইস পাওয়ার জন্য হন্যে হয়ে সারা শহর ঘুরে বেড়াবে। এ সুযোগে শহরটাও দেখা হয়ে যাবে, ডিভাইসও মিলে যাবে, যা দিয়ে সহজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তরগুলো মৃদুমন্দ তরঙ্গের সঙ্গে ইথারে ভেসে তরতর করে তার কানে পৌঁছে যাবে। আহা, কী আনন্দ! গবেট হওয়া সত্ত্বেও আমার সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যাবে। মহাসুখে ক্লাস করতে থাকবে। যখন সেমিস্টার ফাইনালের সময় আসবে, তখন বিমূঢ় হয়ে দেখবে আমার প্রিয় সন্তান সঠিক বিদ্যার অভাবে ক্লাসে কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি। তখন বাধ্য হয়েই সে ছুটবে প্রশ্নের সন্ধানে। যেভাবে চলছে সেভাবে চললে প্রশ্ন পেয়েও যাবে। সুতরাং ডিগ্রি তার আটকায় কার সাধ্য? ডিগ্রি নিয়ে সে যাবে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে, সেখানেও তো কোনো সমস্যা থাকবে না, পেয়ে যাবে কোনো সিবিএ নেতা থেকে একটা নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন। লাগবে শুধু কিছু টাকা।
অবশ্য অর্থ নাও লাগতে পারে, যদি প্রশ্ন ফাঁস করা হয়, শুধুই কোনো চক্রান্ত বা স্যাবোটাজের অংশ হিসেবে। আমার অযোগ্য ছেলেটি ফাঁস করা প্রশ্নের বদৌলতে চাকরিতে যোগদান করবে। এবার শুরু হবে আসল পরীক্ষা, যেখানে ফাঁস করা প্রশ্নের কোনো ভূমিকাই থাকবে না। যেহেতু তার বিদ্যা নেই, সেহেতু চাকরির কাজটি আর করতে পারবে না। আক্কেল গুড়–ম, সন্তান আর বাবা দু’জনেরই। আমও যাবে, ছালাও যাবে। সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে অভিভাবকরাও যেভাবে ফাঁস করা প্রশ্নের পেছনে ছুটছে, তাতে তাদের সন্তানের অবস্থাও হবে আমার কল্পিত সন্তানের মতো।
প্রায় প্রতিদিনই সংবাদপত্রের পাতা উল্টালেই দেখা যায় কেউ না কেউ প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারে কিছু না কিছু লিখছে, বক্তব্য রাখছে, গোলটেবিলে আলোচনা করছে কিংবা কোনো মজলিসে বসে আলাপচারিতায় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন ফাঁস রোধের জন্য আবেদন-নিবেদন করছে। ভালো, সবই ভালো। তবে এত ভালোর মধ্যেই উদ্বিগ্ন হতে হয়। আসলে হচ্ছেটা কী? প্রশ্ন ফাঁস নিয়েই মনে অনেক প্রশ্ন জাগে- প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, নাকি পরীক্ষায় জালিয়াতি হচ্ছে, নাকি প্রশ্ন ফাঁস আর পরীক্ষার জালিয়াতির সমন্বয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় সংঘবদ্ধ সাবোটাজ হচ্ছে? সাবোটাজের কথা বললেই এটাকে অনেকে ‘পলিটিক্যাল বক্তব্য’ বলে ভ্রূ কুঁচকে তাকাচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁসবিষয়ক আলোচনা আগেও ছিল, কিন্তু ইদানীং খুব জোরেশোরে বলা হচ্ছে, লেখা হচ্ছে। বিষয়টা তাই বেশি ভাবিয়ে তুলছে।
কিছুদিন আগে দেখেছি ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ফেসবুকের ‘প্রশ্নহাটে’ বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি হচ্ছে। একশ্রেণীর দুর্বৃত্ত, তারা নাকি আবার শিক্ষক, কৌশলে প্রশ্ন হাতিয়ে নিয়ে বিক্রির জন্য ফেসবুকে অফার দিচ্ছে। কয়েক দিন যাবৎ তারা আর টাকা-পয়সা কিছুই নিচ্ছে না। এমনি এমনি প্রশ্ন সবার হাতে দিয়ে পুণ্য সঞ্চয় করা শুরু করেছে। এতদিন ছিল অর্থের বিনিময়ে বেপরোয়া প্রশ্ন-বাণিজ্য, এখন চলছে মূল্য ছাড়া পুণ্য-বাণিজ্য। এতেই বোঝা যায়, ডালমে কুছ্ কালা হ্যায়। প্রশ্ন ফাঁস শুধু প্রশ্ন ফাঁসের জন্য নাও হতে পারে। মতলব অন্য কোথাও। সে মতলবটা কী? জানা নেই, তবে আন্দাজ করা কঠিন কিছু নয়। অনুমিত মতলব, পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া এবং প্রমাণ করে দেখানো যে, কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি ব্যর্থ, পারেনি তারা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে। সুতরাং এদের আর রাষ্ট্রক্ষমতায় রাখা যাবে না। লাগাও আন্দোলন। শুরু করো জ্বালাও-পোড়াও আগের মতো।
ক্ষমতায় আনো ওদের, যারা নিজেরাই লেখাপড়া করেনি। তাহলেই হবে পোয়াবারো। প্রশ্ন ফাঁসের প্রশ্নই আর উঠবে না। মেধাবী তরুণদের লেখাপড়া করানোরই দরকার হবে না। তারা জাহাজে মহা আনন্দে ভ্রমণ করবে, হাতে থাকবে তরতাজা লালমরিচ, স্মার্টবয় হয়ে করবে দাদাগিরি। পকেটে চলে যাবে অর্থকড়ি অজানা জায়গা থেকে। কাজকর্ম করারই প্রয়োজন হবে না। হয়তো কেউ কেউ প্রশ্ন করবেন, এমনটা হলে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো চলবে কীভাবে? শিক্ষিত-দক্ষ কর্মী কোথায় পাওয়া যাবে? চিন্তা নেই। শিক্ষিত কর্মী আসবে অন্য দেশ থেকে। পণ্যের বাজারের মতো চাকরির বাজারটিও দখল করবে ভিনদেশিরা। ইতিমধ্যেই লাখো সুশিক্ষিত দক্ষ ভিনদেশি চাকরির বাজারে গদিনশীন হয়েছে।
সম্প্রতি প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভুলে ভরা প্রশ্নপত্র। একটি বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকা লিখেছে : ‘‘চলমান প্রাথমিক সমাপনীর (পিইসি) ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি’ পরীক্ষায় এক প্রশ্নপত্রে অর্ধশতাধিক ভুল ধরা পড়েছে।’’ সিলেট বোর্ডের ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নপত্রে ৫০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের ৪০টিতেই ভাষা ও ব্যাকরণগত ভুল। বুঝলাম, প্রশ্নে যারা ভুল করে, তারা অবশ্যই প্রশ্ন-প্রণেতা শিক্ষক। ভুল করেন, কারণ হয়তো তারা নিজেরাই ফাঁস করা প্রশ্ন দিয়ে কিংবা অসদুপায়ে পরীক্ষা দিয়ে তথাকথিত ভালো রেজাল্ট করে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষকতার চাকরিটি বাগিয়েছেন।
কিন্তু যারা প্রশ্ন ফাঁস করে তারা কারা? তারা কি শুধুই শিক্ষক, প্রশ্নপত্র কম্পোজ করা থেকে শুরু করে মুদ্রণ ও বিতরণ পর্যন্ত বেশ দীর্ঘ চেইনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, নাকি অন্য কেউ? কোনো গভীর অনুসন্ধান কি হয়েছে? পারিপার্শ্বিক তথ্য-উপাত্ত কি বিশ্লেষণ করা হয়েছে? কারা এ দুর্বৃত্তায়নের কাজটি বারবার করে যাচ্ছে এবং কেন করছে, তা কি আন্তরিকতার সঙ্গে খতিয়ে দেখা হয়েছে? যদি হয়ে থাকে, তাহলে দেশের উদ্বিগ্ন জনগণ জানতে পারছেন না কেন? আর যদি না হয়ে থাকে, কেন হচ্ছে না? কাজটি কার করার কথা? যাদের করার কথা তারা ভালো করেই জানেন কাজটি তারা যথাসময়ে করেননি, এখনও করছেন না।
এভাবে আর বসে থাকা যাবে না। সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাব্যবস্থা বিধ্বস্ত হওয়ার আগেই জোরেশোরে কাজে নেমে পড়তে হবে। তা এখনই। প্রথমেই শিক্ষাজগতের দেশপ্রেমী নিবেদিত কয়েকজনকে দিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতে পারে। শিক্ষাসংক্রান্ত কাজ শিক্ষাজগতের লোকদের দিয়েই করাতে হবে। তারা তাদের জগৎটা অন্যদের তুলনায় অবশ্যই বেশি ভালো বোঝেন। গঠিত কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ সমাপ্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট জমা দেবে।
কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। চিহ্নিত ব্যক্তিদের ‘জাতীয় দুর্বৃত্ত’ ঘোষণা করে তাদের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ করে সমগ্র জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনাসহ তওবা করার জন্য বাধ্য করতে হবে। তাদের প্রোটেকশন বা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার জন্য কেউ চেষ্টা করলে তাদের সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিচয় যাই থাকুক না কেন, তাদেরও ‘জাতীয় দুর্বৃত্ত লালনকারী’ ঘোষণা করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যেখানে শিক্ষার্থীরা আনন্দঘন পরিবেশে পরীক্ষা দেবে। পরীক্ষা যে ভীতিজনক কিছু নয় তা শিক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্ট করতে হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব, স্কুলেও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। অথচ পরীক্ষা শিক্ষার্থীবান্ধব হচ্ছে না। ভীতিকর পরিবেশে পরীক্ষা নেয়া হলে শিক্ষার্থীরা অসদুপায় অবলম্বন করতে চাইবে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। পরীক্ষা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এসব কীভাবে করা যাবে তা খতিয়ে দেখার জন্য শিক্ষাক্ষেত্রের বোদ্ধাদের নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা যায়। তৃতীয়ত, অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা। অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারটা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় আইটি বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেয়ার প্রয়োজন হবে। দেশে এখন এ ধরনের বিশেষজ্ঞের অভাব আছে বলে মনে হয় না। বিগত কয়েক বছরে সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ভিশনের আলোকে গৃহীত সুশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের ফলে বিপুলসংখ্যক আইটি বিশেষজ্ঞ তৈরি হয়েছে। আমার জানা কয়েকজন আইটি বিশেষজ্ঞ অনলাইন পরীক্ষা প্রকল্প হাতে নেয়া হলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই প্রকল্পে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরও অনলাইন পরীক্ষার ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে বিধায় আমি মনে করি, এ বিষয়ে রাজনৈতিক সাপোর্ট পাওয়া যাবে।
একইসঙ্গে প্রশ্ন ফাঁস রোধে পরিকল্পিত উপায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নৈতিক মানোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিভাবকদেরও বুঝতে হবে, নিজের সন্তানদের ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দিলে নিজের পায়ে কুড়াল মারা হবে। এতে শুধু দেশের ক্ষতিই হবে না, বিদ্যাহীন ‘শিক্ষিত’ সন্তানদের অকর্মণ্যতা পরিবারকেও ধ্বংসের মুখে টেনে নিয়ে যাবে। এরা সম্পদ হবে না, হবে একশ’ ভাগ দায়- পরিবার ও দেশ উভয়ের জন্য।
একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য যুদ্ধের প্রয়োজন নেই। শুধু একটি কাজই যথেষ্ট। তা হল, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধব্বংস করে দেয়া। অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। অন্ধকার প্রকোষ্ঠে প্রায় সারাটা জীবন কাটিয়ে যিনি এ দেশকে শোষণের নাগপাশ থেকে মুক্ত করে ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছিলেন, সেই জাতির জনক যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তার সাধের বাংলাদেশে পাবলিক পরীক্ষার নাভিশ্বাস অবস্থা দেখে সম্ভবত শরমে মরে যেতেন। আমরা গর্ব করে বলতে পারি শিক্ষাক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অনেক অভাবনীয় অর্জনের কথা। প্রায় সব স্কুলবয়সী শিশুকে স্কুলগামী করা সম্ভব হয়েছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে জেন্ডার সমতা অর্জিত হয়েছে, উচ্চশিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ হয়েছে, নারী শিক্ষায় অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার বহুলাংশে বেড়েছে, বছরের প্রথম দিনে প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার দুরূহ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
এখন সময় এসেছে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার। ২০৩০ সালের মধ্যে শিক্ষায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শিক্ষার মানোন্নয়নের বিকল্প নেই। বিভিন্ন ঢংয়ের কোচিং বাণিজ্য আর প্রশ্ন ফাঁসের কালচার জিইয়ে রেখে মানোন্নয়নের কথা বলা বা চিন্তা করা হিপোক্র্যাসির শামিল। পলিসি প্রণেতা আর শিক্ষাব্যবস্থার হাল ধরে আছেন যারা, তাদের সবাইকে বিনয়ের সঙ্গে বলি- চোখ বন্ধ করে চলার সুযোগ নেই। বন্ধ চোখে হাঁটলে হোঁচট খেতেই হবে। তখন শুধু আপনাদের পা-ই ভাঙবে না, দেশের পাও ভেঙ্গে যাবে আপনাদের কারণে। অবশ হয়ে যাবে জাতির মেরুদণ্ড। সময় থাকতে ব্যবস্থা নিন। কী ব্যবস্থা নিতে হবে তা সঠিকভাবে উদ্ভাবন ও হৃদয়ঙ্গম করার জন্য শিক্ষাজগতের নিবেদিত ও যোগ্য ব্যক্তিদের সাহায্য নিন। দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে আশু ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচান।
অধ্যাপক ড. এমএ মাননান : উপাচার্য, বাংলাদেশ উ›মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়