শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) আবাসিক হলে যথাসময়ে সিট পাচ্ছে না নিয়মিত শিক্ষার্থীরা। দুই থেকে আড়াই বছর থাকতে হচ্ছে গণরুমে। কিছু বহিরাগত ও সাবেক শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু সিট দখল করে থাকার কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা। খোদ প্রশাসনের লোকজনও স্বীকার করেছেন, প্রভাবশালী ছাত্রনেতারা সাবেক ও বহিরাগত শিক্ষার্থীদের কাছে সিট ভাড়া দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষকরত্ন শেখ হাসিনা হলের এক ছাত্রী বলেন, ‘দেড় বছরের বেশি সময় ধরে গণরুমের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে আমাদের থাকতে হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থেকে প্রায়ই অসুস্থ হচ্ছে ছাত্রীরা। এক-দেড় মাসের মধ্যে প্রায় ২০ জন অসুস্থ হয়েছে। ’ সিট না পাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাস্টার্স সম্পন্ন করার পরও অনেক ছাত্রীরা সিট ছাড়ছে না।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলেও একই পরিস্থিতির শিকার শিক্ষার্থীরা। ওই হলের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, বেশ কিছু বহিরাগত হলের সিট দখল করে আছে। তাদের কেউ কেউ অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে অথবা চাকরি করে।
কিছু কিছু রুমে আবার সিট খালি পড়ে আছে। আরেক শিক্ষার্থী জানান, ওই হলের দ্বিতীয় তলার এক রুমে বহিরাগতদের নিয়ে নিয়মিত গাঁজার আসর বসে। নবাব সিরাজদ্দৌলা হলের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা এক রুমে প্রায় ৭০ জন ছাত্র থাকি। পড়ার কোনো পরিবেশ এখানে নেই। শেরেবাংলা হল ও শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিব হলেও নিয়মিত শিক্ষার্থীরা যথাযথ আবাসন সুবিধা পাচ্ছে না। অভিযোগ পাওয়া গেছে, প্রভাবশালী ছাত্রনেতারা বহিরাগত ও ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে, এমন শিক্ষার্থীদের কাছে সিট ভাড়া দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসাইন বলেন, ‘কিছু কিছু বহিরাগত এখানকার শিক্ষার্থীদের আত্মীয়ের পরিচয়ে থাকে। তাদের কারণে হলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, এমন অভিযোগও আছে। ভিসি স্যার এবং হল প্রভোস্টদের সঙ্গে নিয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ’
নবাব সিরাজদ্দৌলা হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহম্মদ ইসহাক বলেন, ‘ছয়-সাত মাস আগে হল প্রশাসন কর্তৃক বহিরাগতদের হল ত্যাগের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তারা তা মানেনি। তারা প্রভাবশালী ছাত্রনেতাদের ভাড়া দিয়ে এসব সিটে থাকে। প্রশাসন, ছাত্র, শিক্ষক—সবাইকে নিয়ে এদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ‘বহিরাগতদের বিষয়ে এর আগেও অভিযোগ পেয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা এ সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ’