মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৩য় দফায় জাতীয়করণকৃত ১২টি বিদ্যালয়ের একটি বিদ্যালয় ভুরভুরিয়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত কালীঘাট ইউনিয়নের ভুরভুরিয়া চা বাগানে পুরো ৩৩ শতক ভূমি নিয়ে ২০১০ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৪ সালে এটি নবজাতীয়করণ করা হলেও বিদ্যালয়টিতে কোনো পাকা ভবন নেই। টিন সেডের তৈরি একটি ঘরে ৩টি শ্রেণিকক্ষে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ২১০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শ্রেণিকক্ষের অভাবে বিদ্যালয়ের বাইরে খোলা জায়গায় মাটিতে বসেই ক্লাস করছে কোমলমতি শিশুরা।
ভুরভুরিয়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো উপজেলার ভাড়াউড়া, জাগছড়া, এম আর খাঁন, পুটিয়াছড়া, জুলেখানগর, শিশেলবাড়ি, জঙ্গলবাড়ি, হরিণছড়া, বর্মাছড়া, দিনারপুর, রাজঘাট (লালটিলা) চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোরও একই অবস্থা। বিদ্যালয়গুলোতে নেই কোনো বসার ব্যবস্থা, নেই নিরাপদ খাবার পানি, উন্নত স্যানিটেশন ও অবকাঠামো ব্যবস্থা। এদিকে বিদ্যালয় জাতীয়করণের পর শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের খসড়া গ্যাজেট প্রকাশিত হলেও চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সরকারি বেতন ভাতাদি পাচ্ছেন না বলেও জানা গেছে।
ভুরভুরিয়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবিতা রানী দেব বলেন, “সরকারি অন্যান্য প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মতো আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে সরকারি সহযোগিতার পরিমাণ খুবই কম। আমরা শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সামগ্রী হিসেবে বিভিন্ন খেলনা ক্রয়ের জন্য বছরে মাত্র ৫ হাজার টাকা ও অন্যান্য কাজের জন্য বছরে ৪০ হাজার টাকা সহযোগিতা পাই। এছাড়া খাতাপত্র কেনার জন্য প্রতি মাসে ৫০০ টাকা ও উপবৃত্তির জন্য মাসে ১ হাজার টাকা ছাড়া আর কোনো কিছুই আমরা পাই না।”
শ্রীমঙ্গলে ৩য় দফায় জাতীয়করণকৃত ১২ টি বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. মোশারফ হোসেন জানান, বিদ্যালয়গুলোতে ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য চাহিদাসমূহের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। এ ব্যাপারে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।