প্রযুক্তির এই যুগে ল্যাপটপ এখন অনেকের কাছেই নিত্যব্যবহার্য পণ্যে পরিণত হয়েছে। ভিডিও চ্যাটিংসহ নানা কাজ ল্যাপটপের ওয়েবক্যামের রয়েছে বহুল ব্যবহার। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই বলছে, ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম ঢেকেই রাখা উচিত। হ্যাকারদের কবল থেকে মুক্ত থাকতেই এমন পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বৃটিশ অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
খবরে বলা হয়, ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে এফবিআই। বলা হয়েছে, ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম খোলা রাখার অর্থ হলো হ্যাকারদের কবলে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরাও বলে থাকেন, ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম ব্যবহার করে হ্যাকাররা ল্যাপটপের চারপাশের সবকিছুই দেখে নিতে পারেন। সম্প্রতি অনলাইনে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
ছবিতে দেখা যায়, ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মার্ক জুকারবার্গ তার ম্যাকবুক প্রো’র ওয়েবক্যামটি ঢেকে রেখেছেন। তা থেকেই বুঝা যায় ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম ঢেকে রাখার গুরুত্ব। এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কমিও সেই গুরুত্বের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম ঢেকে রাখাটাই ‘বিচক্ষণতার পরিচয়’। ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম অনেক কাজের হলেও এটাই হ্যাকারদের জন্য সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু। তারা এই ওয়েবক্যামের দখল একবার নিতে পারলে ওই ওয়েবক্যামের সীমার মধ্যে সবকিছুই জেনে নিতে পারবে।
আর সেসব তথ্য ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে কাউকে ব্ল্যাকমেইল করতে বা অন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও ভেঙে দিতে পারবে। এর আগের ফাঁস হওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, আমেরিকা ও অন্যান্য দেশের সরকারের পক্ষ থেকেও জনগণের তথ্য হাতিয়ে নেয়ার জন্য ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম ব্যবহার করা হয়েছে।
জেমস কমি নিজেও সরকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন, তাদের সকলের ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম নিজের প্রয়োজনের সময় ছাড়া ঢেকে রাখা উচিত। তিনি বলেন, ‘আপনি যে বিচক্ষণ কাজটি করতে পারেন তার মধ্যে একটি হলো ওয়েবক্যামটি ঢেকে রাখা।’ তিনি বলেন, ‘ল্যাপটপের ওপর ছোট্ট একটি ক্যামেরা থাকে।
সরকারি অফিসগুলোতে গেলে দেখতে পাবেন সব ল্যাপটপের ঢাকনাই বন্ধ। এটা এ জন্যই করা হয় যাতে কর্তৃপক্ষ এটা ব্যবহার না করতে পারেন। আমার মনে হয় এটাই ঠিক কাজ।’ ওয়েব সিকিউরিটি কোম্পানি হাইড মাই অ্যাস সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে যে তারা ওয়েবক্যামের সঙ্গে ব্যবহারের জন্য বিশেষ গ্যাজেট তৈরি করছেন। এই গ্যাজেট ব্যবহার করলে হ্যাকাররা সহজে ওয়েবক্যামের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে না।
বিশেষ ওই গ্যাজেটে একটি প্লাস্টিকের ফ্রেমও রাখা হয়েছে। এতে কোনো একটি ছবি রাখা যায়। ফলে কেউ ওয়েবক্যামের নিয়ন্ত্রণ নিলেও ওই ছবিটি ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। কেবল ল্যাপটপই নয়, সব ধরনের গ্যাজেটের ক্যামেরার জন্যই এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে তারা।