সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টীবাড়ী হাইস্কুলের পাশে প্রতিষ্ঠিত সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের রিসোর্স টিচার ও হাউজ প্যারেন্ট কাম শিক্ষকের পদ শূন্য হওয়ায় বর্তমানে বাবুর্চি ও নৈশপ্রহরী কর্মরত রয়েছে। ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।
১৯৯৬ সালে ১০ জন ছাত্রকে নিয়ে সাপ্টীবাড়ী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এই কার্যক্রমের আওতায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে সরকারি খরচে আবাসন, খাওয়া ও পড়াশুনার ব্যবস্থা রয়েছে। ছাত্ররা সাপ্টীবাড়ী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হয়ে ক্লাস করছে। আবাস্থলে এসে ব্রেইল প্রদ্ধতিতে শিক্ষা লাভ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ১০ জন ছাত্রের শিক্ষার জন্য একজন রিসোর্স টিচার, একজন হাউজ প্যারেন্ট কাম শিক্ষক, একজন বাবুর্চি ও একজন নৈশপ্রহরীর পদ রয়েছে। হাউস প্যারেন্ট কাম শিক্ষক এক বছর আগে বদলি হয়ে অন্যত্রে চলে গেছেন। গত বছরের আগস্ট পদোন্নতি পেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রিসোর্স টিচার এরশাদ আলী সদর হাসপাতাল সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে সেখানে কর্মরত রয়েছেন। তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতিদিন অফিসে না এসে মাঝে মধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্রদের পড়াশুনার ও দাপ্তরিক কাজের খোঁজখবর নেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার জন্য সার্বক্ষণিক রিসোর্স টিচার ও হাউস প্যারেন্ট কাম শিক্ষক থাকা অত্যাবশ্যক।
সাপ্টীবাড়ীতে প্রতিষ্ঠিত সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় লেখাপড়া করে এখানকার ১৩ জন ছাত্র বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যায়ন করছে। তন্মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ জন, দেশের অন্যান্য কলেজে ৬ জন। বর্তমানে প্রথম শ্রেণিতে ২ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ২ জন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩ জন, ৭ম শ্রেণিতে ১ জন ও ৮ম শ্রেণিতে ১ জন ছাত্র অধ্যায়নরত।
এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধূলা, সাহিত্য চর্চা ও গানবাজনা শেখার সুযোগ রয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্ররা উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের খেলাধূলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গৃহীত কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে ৭টি বিভাগে সমাজ সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রংপুর বিভাগে এই প্রতিষ্ঠানটিকে মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।