কেরানীগঞ্জের ধর্মশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবহেলায় পিইসি চুড়ান্ত পরীক্ষার ১০০ খাতা খোয়া যাওয়ার ঘটনায় উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (এইউইও) ফারজানা শেলীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেঃ পলি রানী সরকার (এইউইও) ও ঝরণা রানী সরকার (এইউইও)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল ১০নং ধর্মশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে খাতা খোয়া যাওয়ার ঘটনায় প্রধান শিক্ষিকার গাফলতির প্রমাণ পেয়েছে। এদিকে রিমান্ডে থাকা বিদ্যালয়ের দপ্তরী ও তার পিতার কাছ থেকে খোয়া যাওয়ার খাতার কোন হদিস পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারজানা শেলী বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে আমরা ধর্মশুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তদন্ত করতে যাই। সেখানে আমরা তদন্তকালে জানতে পারি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শাহিনা আক্তার সে নিজেই দপ্তরীর কাছে খাতাগুলো দিয়েছে।
কিন্তু তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমি ২৭ নভেম্বর সকালে বিদ্যালয়ে আমার কক্ষে বসে পিইসি পরীক্ষার বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় খাতা দেখতেছিলাম। এ সময় আমার প্রকৃতির ডাক দেওয়ায় আমি বাথ রুমে যাই। এসে দেখি আমার টেবিলের উপর খাতাগুলো নাই। পরে আমি দপ্তরীকে খোঁজ করে তাকেও পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে তিনি (শাহিনা আক্তার) কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেছে। সে মামলায় বিদ্যলয়ের দপ্তরী ও তার পিতাকে গ্রেপ্তার করেছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাজেদা সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শাহিনা আক্তারের গাফলতির প্রমাণ পেয়েছেন। তিনি একেক সময় একেক কথা বলছেন। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের দপ্তরী পুলিশ হেফাজতে থাকা সুজনও খোয়া যাওয়া খাতাগুলো নিয়ে বিভিন্ন টালবাহানার করছে। নিয়ম অনুযারী বৃহস্পতিবার শাহিনা আক্তার ম্যাডামের খাতা জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। সে যদি সময় মত খাতা দিতে না পারে এবং তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসে সুপারিশ করা হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হেনা মোস্তফা রেজার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালত একদিনের রিমান্ড দেন। সুজনকে জিজ্ঞাসা বাদে সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বলছে। তার পৈত্তিক সম্পতি নিয়ে বিরোধের জের হিসাবে প্রতিপক্ষকে ফাসানোর জন্য কখনো বলছে খাতাগুলো ছিড়ে ফেলে নদী ফেলে দিয়েছে, আবার কখনো বলছে পুড়িয়ে ফেলছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খোয়া যাওয়া পিইসির ১০০ খাতা এখনো উদ্ধার হয়নি।