মহান ভাষা আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আসন্ন ৬৪তম বার্ষিকীকে সমানে রেখে, গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে পুরানা পল্টনের প্রগতি মিলনায়তনে।
বৈঠকে বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভাষা আন্দোলনের অন্যতম, দ্বিতীয় দাবি সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলন না হওয়ার কার্যকারণ অনুসন্ধান এবং ছাত্র সমাজরে করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সকল জাতিসত্ত্বা তথা বাংলাদেশের সকল আদিবাসী গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করণের বিষয়ে ছাত্র সমাজের করণীয় সম্পর্কে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি লাকী আক্তার, সঞ্চালনা এবং অভিসন্ধর্ভ পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জি এম জিলানী শুভ। বৈঠকে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা গবেষক তপন কুমার দাশ এবং সাবেক ছাত্রনেতা ও শিক্ষা গবেষক ড. মুস্তাফিজুর রহমান। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের তরফ থেকে আলোচনা করেন গারো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (গাসু)-এর টনি ম্যাথিউ চিরান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মারমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সংসদের নেতা গোলাম মোস্তফা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবালুর কবির।
সুমন মারমা তার আলোচনায় বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ সরকারের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংহতি সমিতির শান্তিচুক্তির সময়ও আদিবাসীদের মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকারের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত ছিল। আদিবাসী শিশুদের প্রথম শ্রেণী থেকেই বাড়ীতে মাতৃষাভাসহ, বাংলা ও ইংরেজিতে শিক্ষা গ্রহণ করতে মাত্রাতিরিক্ত চাপের সম্মুখীন হতে হয়। এই সকল কারণে আদিবাসী শিশুদের মেধার বিকাশে পাহাড় সমান বাঁধার সম্মুখীন হতে হয় এবং শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা শেষ হওয়ার আগেই ঝড়ে পরে।
আদিবাসী ছাত্রনেতাদের সাথে সহমত পোষণ করে ছাত্র ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে আদিবাসী শিশুদের জন্য নিজ নিজ মাতৃভাষায় পাঠবই যা তৈরি হয়ে প্রেসে যাবার অপেক্ষায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ভুগছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
ছাত্রনেতৃবৃন্দ ১৭ সালের মধ্যে আদিবাসীদের যে ৫টি ভাষায় ইতিমধ্যে শিক্ষা উপকরণ তৈরি করা হয়েছে তার প্রকাশ এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শেষ করার দাবিতে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে সহমত পোষণ করেন।