বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমার কৃষক দুর্নীতি করে না, আমার মজদুর দুর্নীতি করে না, দুর্নীতি করে আমাদের শিক্ষিত সমাজ।’ আজ যখন বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের দুর্নীতির খবর পড়ছি, তখন বঙ্গবন্ধুর সত্য ভাষণ কানে বাজছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য যখন তিনি রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করছিলেন, তখন কিছু রাজনীতিবিদ ও আমলা এবং সুযোগ সন্ধানী কিছু লোক তাদের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিল। অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়। বঙ্গবন্ধু ক্ষোভের সঙ্গে আরও বলেছিলেন, ‘সবাই পায় সোনার খনি আর আমি পাই চোরের খনি’। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সরকার হিমশিম খাচ্ছে বলেই প্রতীয়মান হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ও প্রো-ভিসি নিয়োগ নিয়ে জটিলতা বা বিলম্ব। কর্মচারী ও শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি। এছাড়াও আছে স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের পদ দুটি শূন্য হয়েছে গত ১৯ মার্চ। এ পর্যন্ত পদ দুটি পূরণ করা হয়নি। একই অবস্থা গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলরের পদ শূন্য হয়েছে ২০ মার্চ। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদটি শূন্য হয়েছে ৭ এপ্রিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান পদ ভিসির। তার অনুপস্থিতিতে সকল কর্মকা- স্থবির হয়ে পড়ে। কর্মচারীদের বেতনসহ বিভিন্ন আর্থিক খাত বন্ধ হয়ে যায়। দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের পদ শূন্য ছিল প্রায় পাঁচ মাস। অর্থাৎ ২৬ সেপ্টেম্বর’১৬ থেকে ২ ফেব্রুয়ারি’১৭ পর্যন্ত। এই দীর্ঘ সময় ভাইস চ্যান্সেলরের পদ শূন্য থাকার কারণে দিনাজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বিলম্বিত হয়। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি সংবাদপত্রে প্রকাশ করার পরও ভিসির পদ শূন্য থাকায় ভর্তি পরীক্ষা পেছাতে হয়। অর্থাৎ ভর্তি বিলম্বিত হওয়ায় প্রায় দুই মাস পিছিয়ে যাওয়ায় সেশন জট হয়েছে সামান্য হলেও।
গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রায় একই রকম অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী ভাইস চ্যান্সেলর ডক্টর আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ঢাকায় জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে আর্থিক অস্বচ্ছতাসহ শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে প্রচার আছে। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যায়ের ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন সংগ্রামের খবর আমরা সবাই সংবাদ মাধ্যমে পড়েছি। গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যন্সেলর ড. মোহাম্মদ মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ও মানববন্ধন করেছেন ওই বিশ্ব্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। এর বিরুদ্ধে অর্থাৎ ড. মাহবুবর রহমানের পক্ষে ৫৫ জন শিক্ষক লিখিত বিবৃতি প্রদান করেছেন। তারা বিবৃতিতে লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদ লাভে আগ্রহী কিছু শিক্ষক তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ড. মাহবুবের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রচারে নেমেছেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরদের বিরুদ্ধে কমবেশি স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে যনবাহন ক্রয় (বাস, জিপ, অ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদি) থেকে শুরু করে ইন্টারনাল টেলিকমিনিকেশন, আসবাবপত্র ক্রয়, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদিতেও দুর্নীতির হওয়ার খবর সংবাদপত্রের পাতায় পড়ি। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অর্থের লেন-দেন হয়েছে এমন অভিযোগ কানে আসে। ভূতপূর্ব ভাইস চ্যান্সেলর তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভায়রা, শ্যালিকা, ভাগ্নে, ভাতিজাকে বিভিন্ন পদে চাকরি প্রদান করে গেছেন। যানবাহন খাতে অযথা অর্থ ব্যয় করার অভিযোগ রয়েছে প্রায় সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের বাড়ি নির্মাণ হয়েছে প্রায় এক বছর পূর্বে। কোটি টাকায় নির্মিত ওই বাড়িতে ভিসি থাকেন না। তিনি শহরের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। সেখানেই অফিস করেন। এই খাতে বছরে প্রায় ২০ লাখ টাকা অতিরিক্ত বা অযথা খরচ করা হচ্ছে। এই টাকা তো জনগণের। রাষ্ট্রের টাকা বা জনগণের টাকা এভাবে কেন অপচয় করা হচ্ছে? আবার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে চিকিৎসা খাতে টাকা নেয়া হয়। অথচ তাদের ওষুধ প্রদান করা হয় না। যদিও রয়েছে দুজন চিকিৎসক। সম্প্রতি আরও দুজন চিকিৎসক বা ডাক্তার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়েছে এমন খবরও সংবাদপত্রে পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষার্থীরা ভর্তির সময় ছাড়াও প্রতি মাসে ‘টিউশন ফি’ প্রদান করে থাকে। খেলাধুলার জন্য টাকা দেয় শিক্ষার্থীরা অথচ খেলা হয় না, হয় না সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। এক খাতের অর্থ অন্য খাতে ব্যয় না করার বিধানও মানা হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সান্ধ্যকালীন ক্লাস নিয়ে বাড়তি অর্থ আয়ের পথ করে নিয়েছেন। সেখানে চলে নানা অনিয়ম। বরাদ্দকৃত আসনের চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করে বাড়তি আয় করার অভিযোগ আছে পাবনাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন ব্যুরো তদন্ত শুরু করেছে। কথায় বলে ‘যা রটে তা কিছুটা বটে’। অবাক লাগে যখন দেখি বা শুনি সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের শিক্ষক বা ভাইস চ্যন্সেলরের বিরুদ্ধে ‘দুদক’ তদন্ত করছে তখনই তো লজ্জায় মাথা নত হয়ে আসে। তখন মনে পড়ে বঙ্গবন্ধুর কথা। তিনি যথার্থই বলেছিলেন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অবস্থা আরও নাজুক। বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই। ছোট্ট পরিসরে যেনতেন প্রকারে চলে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ। বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব নেই। সংবাদপত্রেই পড়লাম, ৯৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৮টির আয়-ব্যয়ের হিসাব রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে। বাকি ৭৭টির মধ্যে ৭০টির আয়-ব্যয়ের হিসাব নেই (৭টি নতুন)। প্রায় দুই যুগ গত হয়েছে অথচ ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অডিট রিপোর্ট নেই। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’র টাকা যথেচ্চার ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ট্রাস্টি বোর্ড নানাভাবে অর্থ খরচ করছেন। তারা সম্মানীভাতাসহ বিদেশ ভ্রমণ করছেন এই টাকায়। নিয়ম রয়েছে প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে আর্থিক বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেয়ার। অথচ তারা তা মোটেই করছেন না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ৪৫ ধারা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এই ধারা লঙ্ঘনের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাতিলের বিধান থাকলেও তা কার্যকর করা হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় নেই বলে সংবাদ মাধ্যমে কয়েক দফা খবর প্রকাশিত হওয়ার পরও অবস্থার কোন উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মঞ্জুরি কমিশনের উদাসীনতার কারণে গত পাঁচ বছরেও চূড়ান্ত হয়নি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান নির্ধারণ সংক্রান্ত ‘অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল ফর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশ’ বিধিমালা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানায় রয়েছেন, ক্ষমতাসীন দলের হোমরা-চোমরারা। যে কারণে এখানে আইন-কানুন সবই বিকল।
যেসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের পদ শূন্য হয়েছে সেগুলোর পদে আসীন হওয়ার আশায় নিজেদের যোগ্যতার কাগজপত্র (জীবন বৃত্তান্ত) নিয়ে তদবিরে ব্যস্ত এখন প্রায় শতাধিক প্রফেসর। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় একশ জন শিক্ষক ভিসি ও প্রো-ভিসি হওয়ার জন্য তদবির করছেন। তারা নানাভাবে, নানা কায়দায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টায় নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন। একই অবস্থা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের। গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হওয়ার জন্য জোর তদবির চলছে। সেখানে তো রীতিমতো ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে দুপক্ষ শিক্ষক মুখোমুখি!
তদবিরের জন্য নানা কায়দায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বড় আমলা থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রীসহ বড় বড় দলীয় নেতার শরণাপন্ন হচ্ছেন তারা। সত্য-মিথ্যা জানি না। একটি সূত্র বলছেন, তদবিরে নাকি টাকা-পয়সার লেনদেনও হয়ে থাকে। আমি নিশ্চিত প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী এই টাকা নেন না। তা হলে কার বা কাদের পকেটে তদবিরের অর্থ উঠবে? উল্লেখ্য, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ভিসি ও ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়ে থাকেন। তিনি এই নিয়োগ দেন প্রধানমন্ত্রীর পরমর্শানুসারে। কি এমন মধু আছে ভাইস চ্যান্সেলরের ওই পদটিতে। মধু বা লাভ আছে হেতুই তো তারা টাকার বিনিময়ে পদ কিনতে চেষ্টা করছেন। পুঁজি বিনিয়োগ করলে তো পুঁজিটা সুদ-আসলে ফেরত পাবার চেষ্টাও করবেন তারা। তা হলে কি দাঁড়াবে?
শিক্ষিত লোকরা যে দুর্নীতি করছেন তা এদেশে প্রমাণিত। প্রকৌশলী, বন কর্মকর্তা, আয়কর কর্মকর্তা, কাস্টমসের অফিসার, আমলা, মন্ত্রী সকলেই দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বহু অফিসার ও রাজনীতিবিদ দুর্নীতির দায়ে জেলহাজত বা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন।
শিক্ষকগণ সমাজের আদর্শ। এটাই আমরা ছোট সময়ে বই পত্রে পড়েছি। এখন কি দেখছি বা শুনছি? হায়রে! তারাই এখন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। আমাদের সন্তান বা পরবর্তী প্রজন্মকে সততা ও নিয়মানুবর্তিতার শিক্ষা দিবেন যারা, তারা করছেন দুর্নীতি! সমাজকে ভালো করার কারিগরদের ক্রমাবনতী! ভাবতেই গা শিউরে ওঠে। তা হলে আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ কি? কেন ভাইস চ্যান্সেলর হওয়ার প্রতিযোগিতা? কেন পদের লোভ? এসব তো শুভ লক্ষণ নয়। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তা হলে আদর্শ হবে কোন পথে। কাদের কাছ থেকে দীক্ষা পাবে ন্যায়-নীতি আদর্শের? শিক্ষিত জনেরা যে দুর্নীতি করেন তা তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাবে পরিসংখ্যান নিলেই বোঝা যায়। শুধু দুদকের খাতায় আসামি হিসেবে সাব্যস্ত হলেই কি দুর্নীতিবাজ? না বিবেকের কাছে দায়ী থাকতে হয় একজন মানুষকে। সেই মানুষ যদি শিক্ষিত হন বা সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হন তাহলে তাকে আরও সতর্ক হতে হয়। তা তারা কেন হচ্ছেন না? বরং উল্টো অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন। এসবই কি সামাজিক অবক্ষয়? না, এসবের প্রতিকার নেই। তাই সহজ পথে বা বাঁকা পথে টাকা আয় করে রাতারাতি অর্থ-বিত্ত করে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করছেন এসব শিক্ষিতজনরা। শিক্ষিত লোকেরা যখন দুর্নীতিগ্রস্ত হন তখন তা জাতির জন্য হয় ভয়াবহ। কারণ তারা দেশে টাকা রাখেন না। তারা অবৈধ অর্থ যা আয় করেন তা বিদেশে পাচার করে সেখানে বাড়ি-ঘর করেন। সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে বিলাসী জীবন-যাপন করেন। তাতে দেশ ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতএব এখনই এসব দুর্নীতিবাজ শিক্ষিতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য দরকার সরকারের সদিচ্ছা। অন্যথায় ভয়াবহ সংকটে পড়বে দেশ ও জাতি।
[লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট]
সৌজন্যে: দৈনিক সংবাদ