সহপাঠীকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করায় এক ছাত্রকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ায় অষ্টম শ্রেণির আরেক ছাত্রী এখন বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। ওই ছাত্রের পরিবার মেয়েটিকে এক দফায় মারধর করেছে। আবার হুমকি দিচ্ছে দেখে নেওয়ার।
ঘটনাটি সাটুরিয়া উপজেলার আব্দুর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়ে। গতকাল সোমবার এ প্রতিবেদকের কথা হয় মেয়েটির সঙ্গে তাদের বাড়িতে বসে।
মেয়েটি জানায়, গত মঙ্গলবার টিফিন খাওয়ার সময় মিঠু এক ছাত্রীকে অশ্লীল কথাবার্তা বলে। ভুক্তভোগী মেয়েটি এক শিক্ষককে ঘটনা জানায়। ওই শিক্ষক বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে (মারধরের শিকার) এর সত্যতা নিশ্চিত করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককেও বিষয়টি জানানো হয়। ওই দিনই শিক্ষকরা সবাই মিলে মিঠুকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেন। পরদিন বিকেলে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় মিঠুর মা, বোনসহ এই মেয়েকে বেদম মারধর করে। গ্রামের মানুষজন এগিয়ে এসে তাকে রক্ষা করে। আরেক মেয়ে বলে, ‘সবার সামনে মিঠু আমাকে অশ্লীল কথা বলেছে, তা মুখে বলা সম্ভব না। মাঝেমধ্যে সে এমন করে। বাধ্য হয়ে স্যারের কাছে নালিশ করেছি। সবাই এর সাক্ষ্য দিয়েছে। ’
আবদুর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর অন্য ছাত্রীদের বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। সবাই তা স্বীকার করেছে। মেয়েরা সবাই মিঠুর প্রতি ক্ষুব্ধ। ’ প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আতোয়ার রহমান বলেন, ‘মিঠুর বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অভিযোগ ছিল। কিছুদিন আগে আরেকটি মারামারির ঘটনায় মিঠুর মা মুচলেকা দিয়ে গেছেন। এবার এমন অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে যে, তাকে বহিষ্কার না করে উপায় ছিল না। তার সহপাঠীরাও বলেছে মিঠুকে বহিষ্কার না করলে তারাই স্কুল ছেড়ে চলে যাবে। ’
অভিযোগ অস্বীকার করে মিঠু জানায়, ‘মিথ্যা কথা বলে আমাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করিয়েছে ওই মেয়ে। ’ সব ছাত্রী একই অভিযোগ করল কেন? এমন প্রশ্ন করলে সে নিরুত্তর থাকে। সে জানায়, সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে তার মা, বোনদের সঙ্গে ওই মেয়ের তর্ক হয়েছে। মারধর হয়নি। এদিকে এই মেয়ের মা চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওর বাবা দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে। বাড়িতে একমাত্র পুরুষ বৃদ্ধ শ্বশুর। তিনি অসুস্থ। এ অবস্থায় একা মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে সাহস পাচ্ছি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়েদের জন্য এত কিছু করছেন। আর একটা বখাটের ভয়ে আমি মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে পারছি না। ’