সেশনজটমুক্ত হচ্ছে না ঢাবির কয়েকটি বিভাগ - Dainikshiksha

সেশনজটমুক্ত হচ্ছে না ঢাবির কয়েকটি বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নিয়মিত পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশ না হওয়ায় ভয়াবহ সেশনজটে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিয়মিত পরীক্ষা গ্রহণ ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অবহেলার কারণেই সেশনজটে আটকে থাকতে হচ্ছে তাদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা গেছে, নানা পদক্ষেপ নেয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগ ও ইনস্টিটিউট এখন সেশনজট মুক্ত। তবে কয়েকটি বিভাগ এখনও এ রাহুর কবল থেকে মুক্ত হতে পারেনি।

নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এখনও তাদের পরীক্ষার ফলাফল পায়নি, যদিও ৪ বছর আট মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে। ফাইনাল পরীক্ষার পরেও এক শিক্ষিকা প্রেজেন্টেশন নিয়েছেন বলে জানান তারা। রেজাল্ট হয়নি বলে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারেনি। মাস্টার্সের শুরু হয় ৫ বছর পরে আর শেষ করতে আরও দেড় বছর বা তার থেকে বেশি সময় লাগে।

সব মিলিয়ে মাস্টার্স শেষ করতে প্রায় ৭-৮ বছর লেগে যায়। কিছুদিন আগে ৫৫তম ব্যাচের রেজাল্ট হয়েছে। অথচ আরও ২-৩ বছর আগে তাদের ফল প্রকাশ করার কথা। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের কাছে সীমিত আকারে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান তারা। সেশনজটের জন্য সিনিয়র শিক্ষকদের দেরিতে ক্লাস নেয়া শুরু করা, সময়মতো পরীক্ষা না নেয়া, লিখিত ও প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার আগে আর মৌখিক পরীক্ষার পরে দীর্ঘদিন ছুটি থাকা এবং দেরিতে ফল প্রকাশ প্রভৃতিকে দূষছেন তারা।

তবে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলছেন অন্য কথা। তিনি বলেন, তার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। ফল প্রকাশে দেরি হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি জানালে তিনি বলেন, ফল প্রকাশে একটু সময় লাগবেই। এবারে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তো কি হয়েছে, পরের বার দিবে। তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীরাই তার নিকট পরীক্ষার জন্য বেশি সময় চান বলে জানান তিনি।

আইন বিভাগের ৪২তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের বিভাগে পরীক্ষার পর ফল ঘোষণা করতে ৬-৭ মাস লেগে যায়। এবার আমাদের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ফল প্রকাশ করা হয় ৫-৬ মাস পর। এ বছরের মার্চে আমাদের ক্লাস শুরু হয়, অথচ রেজাল্ট হয় গত মাসে। আর মাস্টার্সে সেশনজট হয় প্রায় এক বছরের মতো।

আইইআর-এর তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী সেশনজটের জন্য সময়মতো পরীক্ষা না হওয়া, ফল প্রকাশে বিলম্ব প্রভৃতিকেই দায়ী করলেন। তিনি জানান, তার পরীক্ষা শেষে ক্লাস শুরু হয় মার্চে। ফল প্রকাশ হয় আরও পরে। আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি জানান, অন্যরা যখন ফল প্রকাশের পর নতুন বর্ষে পদার্পণ করে, তাদের তখন পরীক্ষাই শুরু হয় না। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চান তিনি।

তবে তার দাবি নাকচ করে দিয়ে বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম বলেন, আমাদের বিভাগে কোন সেশনজট নেই। ৪-৬ মাসের সেশনজটে পড়ে, এটাকে আমরা সেশনজট মনে করি না। যারা এসব বলছে, তারা মনে করে অনার্স পাস করেই বিসিএস দিয়ে দেবে। তারা ক্লাস না করেই ৬ মাসের কোর্সকে ৩ মাসে আনার চেষ্টা করছে। সুতরাং, এটাকে আমি সেশনজট মনে করি না।

ফার্মেসি বিভাগের এক ছাত্র জানান, ফাইনাল পরীক্ষার পর ফল প্রকাশে তাদের ৫-৬ মাস সময় লাগে। এছাড়া সেশনজট তেমন নেই। একই মত পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রের। তিনি জানান, অন্য বিভাগের তুলনায় তার বিভাগে ফল প্রকাশে তুলনামূলক বেশি সময় লাগে। তিনিও এবার ফল হাতে পেয়েছেন তিন মাস পর।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) নাসরিন আহমেদের মুঠোফোনে অনেকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সেশনজটের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট এখন শূন্যের ঘরে। তবে কয়েকটি বিভাগে সেশনজট আছে। সেটা বিভাগের দায়িত্ব, কিভাবে সেশনজট মুক্ত করা যায়। এছাড়া এক্ষেত্রে শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাব আছে বলেও জানান তিনি। তবে সেশনজট দ্রুতই নিরসন হবে আশ্বাস দেন তিনি।

উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.024293184280396