স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক আটক - দৈনিকশিক্ষা

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি |

ফরিদপুর সদর উপজেলার হাট গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একই স্কুলের কৃষি বিষয়ক শিক্ষক রেজাউল করিম লাভলু (৩৮) কে আটক করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।

ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় রেজাউল করিমকে বুধবার সকালে বেদম প্রহার করে স্কুলের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়।

৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর কোতয়ালী থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল করে।

স্থানীয় এলাকাবাসী, স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলের কৃষি শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক রেজাউল করিম স্কুলের ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে পরীক্ষায় বেশী নম্বর দেবার কথা বলে স্কুলের একটি কক্ষে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে জানালে স্কুল থেকে বের করে দেবার হুমকি দেয়া হয়। ফলে ভয়ে সেই ছাত্রী ঘটনাটি এতদিন কাউকে বলতে সাহস পায়নি।

সম্প্রতি অভিযুক্ত রেজাউল ছাত্রীটিকে ফের অশ্লীল প্রস্তাব দিলে সে তার সহকর্মীদের কাছে বিষয়টি বলে দেয়। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বুধবার সকালে রেজাউল করিম স্কুলে এলে স্কুলের কয়েকশ শিক্ষার্থী বিষয়টি নিয়ে রেজাউল করিমের সাথে কথা বলতে গেলে সে শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হবার চেষ্টা করে। এসময় স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী রেজাউল করিমকে বেদম প্রহার করে একটি শ্রেণি কক্ষে আটকে রাখে। স্কুল শিক্ষকের এহেন কর্মকান্ডে এলাকাজুড়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। ঘটনা শোনার পর থেকেই স্থানীয় এলাকাবাসী, স্কুলের শিক্ষার্থীরা রেজাউল করিমকে ঘেরাও করে রাখে। সকাল থেকেই শিক্ষকের বিচার দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি অবহিত করে। পরে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রভাংশু মহান সোম ও কোতয়ালী থানার একদল পুলিশ স্কুলে যায়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে বৈঠক করে বেলা সাড়ে চারটার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়।

স্কুলের একাধিক শিক্ষক জানান, ২০১০ সালে স্কুলে চাকুরী নেয়া দুই সন্তানের জনক রেজাউল করিম এর আগেও প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে এক ছাত্রীর সাথে অপকর্ম করে ধরা পড়ে সে মামলায় জেলও খেটেছিল। স্কুলের আরবী শিক্ষক মনসুর আলী বলেন, তিনি বেশ দূর থেকে স্কুলে আসেন। ফলে বৃষ্টি হলে তিনি স্কুলের একটি রুমে থাকেন। সেই কক্ষটি একটি অংশ আলমারী দিয়ে ঢাকা এবং বাকি অর্ধেক অংশে তিনি খাট পেতে মাঝে মধ্যে থাকতেন। মনসুর আলী জানান, মাঝে মধ্যে দুপুরের টিফিনের পর শিক্ষক রেজাউল করিম কাজের কথা বলে তার থাকার কক্ষে গিয়ে তাকে ঘুরে আসার কথা বলতেন। সে জানায়, কয়েকদিন এ কক্ষে তিনি রেজাউল করিম ও উক্ত ছাত্রীকে দেখেছেন। স্কুলের কতিপয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আরবী শিক্ষক মনসুর আলী বিষয়টি জানলেও সে স্কুলের কাউকে জানায়নি এজন্য তারও কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার। এ ঘটনার পর স্কুলের শিক্ষক-ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা জরুরী বৈঠক করেন। বিষয়টি তারা উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন জানান, সকালে স্কুলের শিক্ষার্থীরা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে জনৈক ছাত্রীকে ধর্ষণের কথা বলে তার কাছে বিচারের জন্য আসে। পরে উত্তেজিত শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী শিক্ষক রেজাউলকে মারপিট করে একটি কক্ষে আটক করে রাখে।

ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রভাংশু মহান সোম জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠায় তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, নির্যাতনের শিকার হওয়া স্কুল ছাত্রীটির মা জানান, শিক্ষক রেজাউল করিম তার মেয়েকে বিয়ে করেছে বলে লোক মারফত আমাকে জানায়। কিন্তু কথাটি আমি বিশ্বাস করিনি। এ বিষয়ে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, স্যার তার কাছ থেকে সাদা কাগজে একটি স্বাক্ষর নিয়েছে। আমার মেয়ের বয়স মাত্র ১৩ বছর। যে শিক্ষক আমার মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে তার উপযুক্ত বিচার চাই। শিক্ষক রেজাউল করিম বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার হুমকিও দিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল করিমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোন কথাই বলবো না।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার এসআই মোঃ গাফফার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে বিক্ষুব্ধ মানুষের কবল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033421516418457