স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ঘটনায় ধর্ষকের বাবা-মাসহ ৪ জন গ্রেফতার - Dainikshiksha

স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ঘটনায় ধর্ষকের বাবা-মাসহ ৪ জন গ্রেফতার

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি |

মণিরামপুরে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ৩ ধর্ষকের বাবা-মাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার (২১শে ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এদিকে ধর্ষকদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও থানা পুলিশ ধর্ষণের মামলা না নেয়ায় ভিকটিম ও তার বাবা-মা মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে দেখা করেছেন। দেখা করার বিষয়টি ভিকটিমের পিতা নিশ্চিত করেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এরপর ওই রাতেই আসামি গ্রেফতারে মণিরামপুর থানা পুলিশ ধর্ষকদের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় আসামিদের না পেয়ে ধর্ষণ পরবর্তী ঘটনায় সন্তানদের সহযোগিতার অভিযোগে ধর্ষকদের পিতা-মাতাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো মূল আসামি হানুয়ার গ্রামের রুমানের মা পুলিশ সদস্য হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মাহিনুর বেগম (৩৫), রয়েলের পিতা মনোহরপুর গ্রামের আজিজুর রহমান (৪৮) ও মা শাহানারা বেহম (৪০) এবং একই গ্রামের রুবেলের মা ঝর্ণা খাতুন (৪৫)।

২৯ জানুয়ারি রুমান, রুবেল ও রয়েল এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে উপজেলার নলতা গ্রামের কথিত সাখাওয়াত কবিরাজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে মোবাইলে ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে। সেখানে স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আয়েন উদ্দিনকে খবর দিলে পুলিশ ওই কবিরাজের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অসুস্থ স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।   

অভিযোগ রয়েছে পুলিশের অভিযানের সময় ধর্ষকরা কবিরাজের বাড়িতে অবস্থান করলেও মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে তাদেরকে আটক না করে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। এরপর এসআই আয়েন উদ্দিন গোপনে সালিস-দরবারের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। ঘটনার পর ভুক্তভোগী পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে ভিকটিমের মাকে ভুল বুঝিয়ে নেয়া হয় অপহরণের মামলা। বিষয়টি ভিকটিম আদালতে দায়েরকৃত মামলায় সেটি উল্লেখ করেছেন। মানবাধিকার কর্মীরা জানতে পেরে ভিকটিমের পাশে এসে দাঁড়ায়।

এরপর মানবাধিকার কর্মীরা ভিকটিমসহ ভিডিও ফুটেজ নিয়ে থানায় ধর্ষণের মামলা করতে গেলে উল্টো তাদেরকে ওসি ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ রাখার দায়ে মামলার হুমকি প্রদান করে বলে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা বাস্তবায়ন সংস্থার জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ লাল্টু অভিযোগ করেন। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা থানায় ধর্ষণ মামলা রেকর্ড, আসামি আটক ও ভিকটিম পরিবারকে নিরাপত্তাসহ ৭ দফা দাবিতে প্রেসক্লাব যশোর-এর সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।পরে মানববন্ধনকারীরা ডেপুটি কমিশনার এবং পুলিশ সুপারের নিকট স্মারকলিপি দেয়।

১৫ ফেব্রুয়ারি ভিকটিম বাদী হয়ে যশোর সিনয়ির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ধর্ষণসহ পর্নোগ্রাফি ধারায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৮৩/১৭। মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) নির্দেশ দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ সর্বমহলে তোড়পাড়ের সৃষ্টি হয়। এরই অংশ হিসেবে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কথিত সাখাওয়াত কবিরাজকে আটক করে। এ সময় পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর কবিরাজ সাখাওয়াতকে আদালতে চালান দেয়া হয়।

এদিকে থানা পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা না পেয়ে আসামি গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসভবনে ভিকটিম ও তার পিতা-মাতা দেখা করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে সব শুনে আসামি গ্রেফতারে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন বলে একটি সূত্র জানায়। পরে ওই রাতেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়ে মণিরামপুর থানা পুলিশ আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু ঘটনার পর পরই ধর্ষক রুমান, রুবেল ও রয়েল গা-ঢাকা দেয়। ভিকটিমের পিতার দাবি পুলিশ প্রথম দিকে তৎপর হলে আসামিদের সহজেই গ্রেফতার করতে পারত।

এ প্রসঙ্গে রাজগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আয়েন উদ্দিন আসামির পিতা-মাতাদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষকদের অভিভাবকরা তৎপর হলে মোবাইলে ধারণকৃত পাশবিক নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ত না। এই কারণে ছেলেদের অপকর্মের সহযোগিতার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। জানতে চাইলে ওসি বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ইতোমধ্যে অপহরণের মামলার সাথে ধর্ষণ, পর্নোগ্রাফি আইনের ধারা সংযোজন করা হয়েছে। মামলার অগ্রগতির ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, অতি দ্রুত মূল আসামিরা গ্রেফতার হবে।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.018517971038818