গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার ৮২নং নিজামকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগে জানা যায়, চারটি দাগে ওই বিদ্যালয়ের ৩৯ শতাংশ জমি রয়েছে, যা সরকারের শিক্ষা বিভাগের নামে রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী নান্টু শেখ, হালিম শেখ, ঠাণ্ডু মুন্সী, সিরাজুল ইসলাম, ফাইজুর মোল্যা, মাসুদ শেখ, জাহাঙ্গীর মোল্যা প্রমুখ বিদ্যালয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেছে। এ ছাড়া গত বছর পুরনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণকালে বিদ্যালয়ের কিছু অংশ জায়গা ফাঁকা হয়। এসব জায়গাও এখন দখলের পাঁয়তারা করছে স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যুরা। সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ে ঘেঁষে তিন দিকের জায়গা প্রভাবশালীরা দখল করে দোকান নির্মাণ করেছে। বিদ্যালয়ের মূল প্রবেশপথে দোকানঘর নির্মাণের পাঁয়তারা করছে এক প্রভাবশালী। বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত ল্যাট্রিনের প্রবেশমুখ প্রায় বন্ধ করে দোকানঘর নির্মাণ করেছে প্রভাবশালীরা। এতে শিক্ষার্থীদের ল্যাট্রিনে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আলো-বাতাস ঢুকতে পারছে না। এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, স্কুলের জায়গা যদি এভাবে প্রভাবশালীদের দখলে চলে যায়, তাহলে শিক্ষার পরিবেশ আর থাকবে না। স্কুলের জায়গা দখল হলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা উর্মিলা বিশ্বাস জানান, অনেক আগে থেকেই স্কুলের তিনপাশের জায়গা দখল হয়ে গেছে। নতুন ভবন নির্মাণের সময় ফাঁকা হওয়া জায়গাও এখন দখলের পাঁয়তারা করছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার পরিবেশ থাকবে না। বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. শাহজাহান মোল্যা বলেন, বিদ্যালয়ের কিছু অংশ জায়গা জবরদখল হয়ে গেছে। এ জায়গা উদ্ধার এবং নতুন জবরদখলের হাত থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষা করার জন্য ইউএনওকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। নিজামকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাব্বত হোসেন জুয়েল জানান, যদি স্কুলের জায়গা দখল হয়ে থাকে, তাহলে দখলদার যতই প্রভাবশালী হোক তাকে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মাঈন উদ্দিন অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, স্কুলের জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা জরুরি ভিত্তিতে উচ্ছেদ করা হবে।