নাটোরের সিংড়া উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুর ১২টার দিকে পৌর এলাকার চকসিংড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রীর নাম সাবিনা ইয়াসমিন রিয়া (১২)। সিংড়া দমদমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত সে।
পরিবারের দাবি, গতকাল স্কুল ড্রেসের সঙ্গে জুতা না পরেই স্কুলে গিয়েছিল রিয়া। পরে স্কুল থেকে বলা হয় বাড়ি এসে জুতা পরে তারপর স্কুলে যেতে। এতে সে অপমানিত বোধ করে এবং নিজের ঘরে ঢুকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, রিয়ার মতো যারা জুতা না পরে এসেছিল, তাদের বাড়ি গিয়ে জুতা পরে আসতে বলা হয়। অনেকেই জুতা পরে এসে ক্লাসে যোগ দেয়। কিন্তু রিয়া আর আসেনি। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীদের ভাষ্য অনুযায়ী, অন্য দিনের মতো গতকাল সকালেও সিংড়া দমদমা বালিকা বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন বিভিন্ন শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী ড্রেসের সঙ্গে জুতা না পরেই স্কুলে আসে। পরের দিন থেকে সবাইকে ড্রেসের সঙ্গে জুতা পরে আসতে বলেন প্রধান শিক্ষক বিলকিস আক্তার বানু। অ্যাসেম্বলি শেষে সবাই যার যার ক্লাসে চলে যায়। পরে আরেক শিক্ষক আবু হানিফ রিয়াসহ তিনজনকে বাড়ি থেকে জুতা পরে আসতে বলেন। রিয়া জুতা পরার জন্য বাড়িতে যায়। তারপর খবর পাওয়া যায় সে আত্মহত্যা করেছে।
রিয়ার বাবা গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘সকালে মেয়ে স্কুল থেকে চলে আসার পর কারণ জানতে চাই। সে জানায়, স্কুল ড্রেসের সঙ্গে জুতা পরে না যাওয়ায় তাকে জুতা পরে স্কুলে যেতে বলা হয়েছে। আমি বলি তুমি জুতা পরে না গেলে তো স্কুল থেকে বের করেই দেবে, কেন জুতা পরে যাওনি? পরে সে নিজের ঘরে ঢুকেই দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়। ’
ক্লাস শিক্ষক আবু হাসান বলেন, অ্যাসেম্বলির সময় দেখা যায় কয়েকজন ড্রেস ও জুতা পরে আসেনি। কেন তারা ড্রেস-জুতা পরে আসেনি সে বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ব্যাখ্যা চান এবং সতর্ক করে দেন। পরে ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাসেও রিয়াসহ তিনজনকে জুতা পরে আসতে বলা হয়। কিন্তু কাউকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া হয়নি।
প্রধান শিক্ষক বিলকিস আক্তার বানু বলেন, সাত-আটজন শিক্ষার্থী জুতা পরে আসেনি। তাদের জুতা পরে আসতে বলা হয়। কেউ কেউ বাড়ি থেকে জুতা পরে এসেও ক্লাসে যোগ দিয়েছে। কিন্তু রিয়া কেন এমন ঘটনা ঘটাল তা বোধগম্য নয়।
সিংড়া থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। তবে কী কারণে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে সে বিষয় এখনো পরিষ্কার হওয়া যায়নি। ’