দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় ১০৪ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। বাঁকি ১০২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছে না, অন্যদিকে মাতৃভাষার সঠিক ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানতেও পারছে না। এ জন্য শিক্ষা প্রশাসনকেই দায়ি করছেন এলাকার সচেতন মহল। সরকারি আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় প্রধানরা বলছে ভিন্ন কথা।
শিক্ষা দপ্তরের সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৪৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২১ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩টি কলেজ, ১১ টি দাখিল মাদ্রাসা, ৪ টি ফাযিল মাদ্রাসা ও একটি আলিম মাদ্রাসা ও ১৯টি কেজি স্কুল রয়েছে। শুধুমাত্র উপজেলার ২নং বোয়লদাড় ইউনিয়নে বোয়ালদাড় উচ্চ বিদ্যালয় ও খাট্রাউছনা উচ্চ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। তাছাড়া বাঁকি ১০২ টি বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার নেই। এর মধ্যে উপজেলা সদরে অবস্থিত ৬ টি বিদ্যালয়ের একটিতেও শহীদ মিনার না থাকায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি ফলকে শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এমনকি জাতীয়করণ ঘোষণাকৃত হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজেও শহীদ মিনার নেই। বাংলাহিলি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাদের স্কুল প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার না থাকায় উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে অবস্থিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকে। ওই কলেজের অধ্যক্ষ মো. রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য কোন সরকারি বাজেট না থাকায় সেটি নির্মাণ করা সম্ভব হয় নি। সরকারি আদেশ অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা আবশ্যক কি-না এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, শহীদ মিনার থাকা ভালো, তাছাড়া কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
খাট্রাউছনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আফজাল হোসেন জানান, সরকারি আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক। আমরা দিবসটি যথাযোগ্য মর্যদায় পালন করার লক্ষে নিজস্ব অর্থায়নে স্কুল প্রাঙ্গণে ২০১০ সালে শহীদ মিনার নির্মাণ করি।
২০১০ সালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার না থাকায় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ছাড়া দিবসটির অন্যান্য কর্মসূচি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, আমি সবেমাত্র এই দপ্তরে যোগদান করেছি। প্রতিটি বিদ্যালয়ে যাতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় সেজন্য আগামী মাসেই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে সভা আয়োজন করা হবে।