চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসায় কর্মচারী নিয়োগ ও পরিচালনা পর্ষদ গঠন নিয়ে বর্তমান কমিটি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসায় মোট ১ হাজার ৬৮৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য ২২ জন এমপিওভুক্ত ও ১০ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কর্মচারী আছেন ৫ জন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। পর্ষদ গঠনের নিয়ম অনুযায়ী, অভিভাবক সদস্যদের ভোটার তালিকা তৈরি শেষে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হয়। কিন্তু ওই মাদ্রাসায় এ ধরনের কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হেফজুর রহমান তিনজন ব্যক্তিকে নির্বাচন ছাড়াই অভিভাবক সদস্য মনোনয়ন দিয়েছেন। তাঁরা হলেন বাকিলা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওমর ফারুক, হাজীগঞ্জ মডেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক বেনজির আহমেদ ও হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ। শহীদুল্লাহর কোনো ছেলেমেয়ে এই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে না। শহীদুল্লাহ বলেন, ‘মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ তাদের উপকারের জন্য দয়া করে আমাকে কমিটিতে রেখেছেন।’
মাদ্রাসা সূত্র জানায়, ছয় মাস আগেও পদ না থাকার পরও শূন্যপদ দেখিয়ে মাদ্রাসায় চারজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দেন। কয়েক মাস খাটিয়ে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু অর্থ দিয়ে তাঁদের বিদায় করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া মাদ্রাসার কারি আবু সাইদকে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হয় না। তাঁর পদে শেখ ফরিদ নামে একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আবু সাইদ বলেন, ‘অধ্যক্ষ আমাকে শ্রেণি কার্যক্রমে পাঠান না। আমি মাদ্রাসায় বসে থেকে কী করব? তবে প্রতি মাসে আমার পাপ্য বেতনের অর্ধেক কেটে শেখ ফরিদকে দেওয়া হয়।’
শহীদুল্লাহর ছেলেমেয়ে মাদ্রাসায় না থাকার পরও তাঁকে অভিভাবক সদস্য পদে নেওয়া প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, তাঁর আত্মীয়স্বজন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। অধ্যক্ষ আরও বলেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ৮১ বছরে এখন পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়নি। কারি আবু সাইদকে দায়িত্ব পালন করতে না দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, সাইদ ক্লাসে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এ কারণে তাঁর জায়গায় খণ্ডকালীন কারি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি তাঁর ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।
পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদ হোসেন ৪ এপ্রিল বলেন, ‘অভিভাবক না হলে অভিভাবক সদস্য হওয়া যায় না। অভিযোগগুলো কেউ আমাকে জানায়নি। তারপরও এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বারবার চেষ্টা করেও অধক্ষ্যের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।