সাতক্ষীরার কলারোয়ার হাজী নাছির উদ্দীন কলেজের দশ শিক্ষকের স্থগিত থাকা এমপিও ছাড় করাতে ফের মরিয়া হয়ে ওঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একটি চক্রের বিরুদ্ধে। চক্রের সঙ্গে ভুয়া সনদ দিয়ে চাকরি ও এমপিওভুক্ত হওয়া হাজী নাছির কলেজের কতিপয় শিক্ষক ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মচারীও যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিতর্কিত অতিরিক্ত সচিব রুহী রহমানকে শিক্ষা থেকে অন্য মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হলেও যাওয়ার আগে অতি গোপনে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ১০ শিক্ষকের একটি শুনানি গ্রহণ করেছেন বলে শোনা যায়। কথিত ওই শুনানিও ওপর ভিত্তি করে স্থগিত থাকা এমপিও ফিরিয়ে দেয়ার তৎপরতা শুরু হয়েছে। কয়েকবছর আগে নিয়োগকালীন যথাযথ যোগ্যতা না থাকা ও ভুয়াসনদসহ নানা কারণে ১০ জন শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করা হয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের সুপারিশের প্রেক্ষিতে।
জানা যায়, গত জুলাই মাসে শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অধ্যাপক মো: মেজবাহ উদ্দিন ও পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সৈয়দ জাফর আলী ও মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ১০ শিক্ষকের শুনানি গ্রহণ করে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন। দৈনিকশিক্ষার হাতে থাকা ওই প্রতিবেদনে দেখা যায় প্রায় সব শিক্ষকই তাদের নিয়োগ অবৈধ এবং নিয়োগকালে যথাযথ যোগ্যতা না থাকার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। কিন্তু ওই শুনানি হিমাগারে রেখে ফের শুনানি করেন বিতর্কিত ও বিদায়ী অতিরিক্ত সচিব। আজকালের মধ্যে ফাইল তুলে ‘মানবিক’ দিক বিবেচনায় স্থগিত এমপিও ছাড় করার চেষ্টা চলছে বলে জানা যায়।
গত সপ্তাহে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অতি গোপনে হাজী নাছির কলেজের ফাইল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় বলে জানান অধিদপ্তরের একজন উপ-পরিচালক ও একজন সহকারি পরিচালক।
উপ-পরিচালক বলেন, ডিআইএর ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় অভিযুক্ত শিক্ষকরা ভুয়া ও জাল সনদ দেখিয়ে চাকুরিলাভ ও এমপিওভু্ক্ত হন।
কারিগরি অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, হাজী নাছির কলেজের কারিগরি শাখার নিয়োগে অনিয়মের আসল চিত্র তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তাই ২৭ এপ্রিল অধিদপ্তরের এমপিও কমিটির সভায় হাজী নাছির কলেজের দুইজন শিক্ষকের স্থগিত থাকা এমপিও ফের ছাড়করণের আবেদনটি নাকচ হয়েছে। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের দুএকজন বিতর্কিত কর্মকর্তা মরিয়া ১০ শিক্ষকের এমপিও ফিরিয়ে দিতে।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের খুলনা অফিস থেকে হাজী নাছির কলেজের ১০ শিক্ষক নিয়োগসহ যাবতীয় কাগজ চেয়েছে।
হাজী নাছির কলেজের কতিপয় শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধে চেতনাবিরোধী একটি পত্রিকায় নিজেদের সাফাই গেয়ে একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে টাকা বিনিময়ে। কলেজ ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে প্রতিবাদ বিজ্ঞাপন ছাপানোর দায়ে নতুন করে অভিযোগ জমা দেয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞাপন দাতাদের বিরুদ্ধে। বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ ওই পত্রিকায় দিতে হয়। কিন্তু তা না করে মন্ত্রণালয়ের একটি চক্রের পরামর্শে টাকার বিনিময়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে হাজী নাছির কলেজের কপিতয় শিক্ষক।