এসএসসির ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি’র বেশি টাকা আদায়কারী যশোর বোর্ডের ১৫১ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত বিদ্যালয়গুলোকে নোটিশ করেছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। রোববারের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে বোর্ডের আওতাধীন ১০ জেলা শিক্ষা অফিসারকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বোর্ড কর্তৃপক্ষ এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র।
যশোর শিক্ষা বোর্ড এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য এক হাজার ৪৪৫ এবং বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এক হাজার ৩৫৫ টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বোর্ড নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। বিষয়টি নিয়ে তখন বিক্ষুব্ধ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ড, জেলা শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু শিক্ষা বোর্ড তখন অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়।
বোর্ড কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ করতে ব্যর্থ হলেও মন্ত্রণালয় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনকে ভিত্তি ধরে মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ নিয়েছে। খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাগেরহাটের ৪৪টি বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে। বিদ্যালয়ভেদে ফরম পূরণের সময় এ জেলায় শিক্ষার্থীপ্রতি অতিরিক্ত ২৪৫ টাকা থেকে দুই হাজার ৪৫ টাকা আদায় করা হয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় খুলনার ১২, কুষ্টিয়ার ৩০, নড়াইলের ২৪, সাতক্ষীরার ৮ ও ঝিনাইদহের ৩৩টি বিদ্যালয় রয়েছে। তবে ওই প্রতিবেদনে যশোর ও মেহেরপুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কথা বলা হলেও তাদের কোনো তালিকা দেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদনে যশোরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে বলা হয়েছে, ভাল ফলের প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়েছে। আর মেহেরপুরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় নিয়ে মন্তব্য করা হয়েছে, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান শিক্ষকরা এক হাজার ১৫ টাকা অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেন।
জেলার সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই হারে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। আর মেহেরপুরের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় ৯৪০ টাকা।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, ২ ফেব্রুয়ারি বোর্ড নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সাত দিন সময় দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিয়েছে কি-না তা জানাতে বলা হয়েছে। আমরা বিদ্যালয় থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তথ্য নিয়ে পরদিন ৮ তারিখে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাব। এই তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় করণীয় নির্ধারণ করবে।