জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে আত্তীকরণের জন্য প্রচলিত ‘আত্তীকরণ বিধিমালা-২০০০’ বাতিলের দাবীতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ ( রোববার) থেকে দেশের সব সরকারি কলেজে দুই দিনের কর্মবিরতি শুরু করেছেন বিসিএস শিক্ষকরা। কাল সোমবার ২৭ নভেম্বরও কর্মসূচি চলবে। অধিদপ্তর ও বোর্ডসহ সব প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালন করার কর্মসূচি রয়েছে। আত্তীকরণ বিধিমালা বাতিল করে নতুন বিধি তৈরি করে জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত ২৮৩ কলেজের শিক্ষকদের নন-ক্যাডার নিশ্চিতকরণের দাবী তুলেছেন তারা।
এর আগে গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতারা। পরে ঢাকা কলেজের এক বৈঠকে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শহীদ মিনারের সমাবেশে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, তাদের দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ সময় সমিতির অন্যান্য নেতারা বলেন, সদ্য জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের নন ক্যাডার ঘোষণা করে আলাদা বিধিমালা জারি করতে হবে। ২০০০ বিধি বাতিল করতে হবে।
বর্তমানে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে বেসরকারি কলেজ ও মাধ্যমিক স্কুল সরকারিকরণ করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বেসরকারি ২৮৩ কলেজ ও ৩৭১টি স্কুল সরকারি বা জাতীয়করণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ক্যাডারভূক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি গত মার্চ মাস থেকে তাদের দাবির পক্ষে কর্মসূচি পালন করে আসছে।
বিসিএস শিক্ষকেদের দাবি ‘বিসিএস ছাড়া কারো চাকরি ক্যাডারভুক্ত করা যাবে না। এ ছাড়া বেসরকারি কলেজ জাতীয়করণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী জাতীয়করণের আওতাভূক্ত কলেজে বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকদের চাকরি বদলিযোগ্য হবে না। তাদের চাকরি নিজ নিজ কলেজেই সুনির্দিষ্ট হতে হবে’।
সারা দেশে বর্তমানে ৩৩৫টি সরকারি কলেজে বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডারভূক্ত ১৫ হাজার শিক্ষক আছেন। এদের মধ্যে বেসরকারি কলেজ থেকে আত্তীকৃত হয়েছেন প্রায় তিন হাজার। অপরদিকে জাতীয়করণের জন্য চূড়ান্ত করা ২৮৩টি বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের সংখ্যা প্রায় আট হাজার।
২০০০ খ্রিস্টাব্দে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় একইভাবে কলেজ জাতীয়করণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতৃবৃন্দ। অবশেষে, সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে একটি বিধিমালা তৈরি হয়। সেই বিধির নাম ‘আত্তীকরণ বিধিমালা ২০০০’। বর্তমানেও শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীত্বের সময়ে শিক্ষা সমিতি সেই পুরনো দাবী সামনে এনে আন্দোলন-কর্মবিরতি করছেন। তাদের যুক্তি পরীক্ষা ছাড়া বি সি এস ক্যাডারভুক্ত হওয়া চলবে না। আর জাতীয়কৃতদের যুক্তি সেরা বেসরকারি কলেজগুলোকে জাতীয়করণ করা হয় বলেই শিক্ষা ক্যাডারের জনবল আজ ১৪ হাজারে দাড়িয়েছে। এনটিআরসিএর মাধ্যমে নেয়া ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তারা নিয়োগ পেয়েছেন। পক্ষান্তরে, কোটায়, ঘুষ দিয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে বি সি এস ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন শত শত শিক্ষক। আবার ১০ শতাংশ কোটায় নিয়োগ পাচ্ছেন বি সি এস পরীক্ষা ছাড়াই।