২০০৬  খ্রিস্টাব্দের পর দারুল ইহসানের দেয়া সব সার্টিফিকেট বাতিল - দৈনিকশিক্ষা

২০০৬ খ্রিস্টাব্দের পর দারুল ইহসানের দেয়া সব সার্টিফিকেট বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক |

২০০৬  খ্রিস্টাব্দের পরে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া সব সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়েছে। সম্প্রতি হাইকোর্টের দেওয়া এক রায়ের বরাত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০০৬  খ্রিস্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অবৈধ ঘোষণা করেছিল। তখনই এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির কোনও শাখাতেই ভর্তি না হওয়ার জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল। তারপর ওই বিশ্ববিদ্যালয়টির চার মালিক হাইকোর্টে রিট করে স্থগিতাদেশ নিয়ে এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সর্বশেষ গত ২৫ জুলাই হাইকোর্ট তাদের চূড়ান্ত রায় জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবৈধ ঘোষণা করাকে সঠিক সিদ্ধান্ত হিসেবে গুরুত্ব দিয়েছেন হাইকোর্ট এবং ২০০৬  খ্রিস্টাব্দের পরে চালিয়ে যাওয়া সব কার্যক্রমকেই অবৈধ ঘোষণা করেছেন।

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, যেহেতু হাইকোর্ট বিগত ১০ বছরে চালিয়ে যাওয়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রমকেই অবৈধ ঘোষণা করেছেন, সেকারণে এই সময়ে নেওয়া সব সিদ্ধান্তই বাতিল। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৬  খ্রিস্টাব্দের পরে দেওয়া সব সার্টিফিকেটও বাতিল।

তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থী ২০০৬  খ্রিস্টাব্দের আগে ভর্তি হয়ে পাশ করেছে এবং সার্টিফিকেট নিয়েছে তাদের সার্টিফিকেট বাতিল হবে না। ২০০৬  খ্রিস্টাব্দের পরে যারা ভর্তি হয়েছে তাদের সার্টিফিকেটই কেবল বাতিল।

গত ২৫ জুলাই হাইকোর্ট দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধের আদেশ দেন। এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতেই ২৬ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৩৫টি ক্যাম্পাসের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণার পরের দিনই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বর্তমান শিক্ষার্থীরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করতে পারবে। ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকার তাদেরকে সহযোগিতা করবে।’

আবদুল মান্নান এ বিষয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির চারজন মালিক। চার মালিকের ১৩৫টি ক্যাম্পাস রয়েছে। যে মালিকের ক্যাম্পাসে যে শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেছেন তারা ওই মালিকের কাছেই টাকা দাবি করতে পারবেন। তবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে কি না তা বলা যাচ্ছে না। এখানে কিছু জটিলতা রয়েছে।

জটিলতা কী নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা ২০০৬-এ বিশ্ববিদ্যালয়টি অবৈধ ঘোষণা করি সে হিসেবে ২০০৬ এর পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া কোনও শিক্ষার্থীকে ইউজিসি শিক্ষার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। ফলে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে জটিলতা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৩৫ ক্যাম্পাসে ২৫ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতো বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০০৭  খ্রিস্টাব্দে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরিত একজন উপাচার্যকে নিয়োগ দেওয়া হয়। হাইকোর্টে মামলা চলমান থাকলে সেখানে কীভাবে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয় জানতে চাইলে মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, উপাচার্য নিয়োগের একমাত্র এখতিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এবং রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরেই নিয়োগ দেওয়া হয়। সুতরাং এখানে ইউজিসি’র কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।

তবে ২০১৫  খ্রিস্টাব্দের ৩১ মে বিশ্ববিদ্যালয়টির ধানমণ্ডি ৯/এ ক্যাম্পাস থেকে দেওয়া সব সার্টিফিকেটের বৈধতা দিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছিল। কিন্তু তখন সার্টিফিকেটের বৈধতা দেওয়া হলেও এখন কেন তা অবৈধ বলা হয়েছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, তাদের সার্টিফিকেট অবৈধ সেটা তো ইউজিসি অথবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে না। রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের ওপর আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।

উল্লেখ্য, দারুল থেকে সনদ কিনে সহকারি গ্রন্থাগারিক হয়েছেন প্রায় দশ হাজার। এরা সবাই এমপিওভুক্ত হয়েছেন। সাবেক মহাপরিচালকের ভাই দারুলের সনদ বিক্রি করতেন বলে বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সহকারী গ্রন্থাগারিকদের নিয়োগ বাতিল হবে কী-না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত - dainik shiksha ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল - dainik shiksha শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল - dainik shiksha ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043849945068359