পাবনার সুজানগর মহিলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষ মিলে মাত্র ৬ জন ছাত্রী ভর্তি আছে। তাদের নিয়েই চলছে বিজ্ঞান বিভাগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় দেড় যুগ ধরেই বিজ্ঞান বিভাগটি এরকম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। তবে এই ৬ ছাত্রীর পাঠদানের জন্য শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা কিন্তু কম নেই।
শিক্ষার্থীর সমপরিমাণ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত থেকে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বেতনভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন। সরকারের প্রতিমাসে কমপক্ষে দেড় লক্ষাধিক টাকা গচ্ছা যাচ্ছে এই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগটি চালু রাখার কারণে। একেক বর্ষে মাত্র ৩ জন করে শিক্ষার্থী থাকায় ভর্তির পরে মাসখানেক কলেজে যাতায়াত করলেও বাকি ১১ মাস ছাত্রীরা কলেজে যায় না।
ফলে কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ৪ জন শিক্ষক, এক জন প্রদর্শক ও নিয়োজিত এক জন পিওনকেও আর কলেজে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। এই সব শিক্ষক-কর্মচারীরা মাসে ৫/৭ দিন কলেজে গিয়ে প্রতিদিনের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বাড়ি ফিরে আসেন।
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এ অনৈতিক কাজগুলো তারা অধ্যক্ষের যোগসাজসেই করছেন। এ জন্য অধ্যক্ষকে প্রতি মাসে ফলমূল কিনে দিয়ে খুশি করতে হয়।
এলাকার ধুরন্ধর ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার মুন্সী ছাত্রীদের সংখ্যায় বেশি দেখিয়ে ভূয়া তালিকা তৈরি করে কলেজটি এমপিও ভুক্ত করেছিলেন। জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ছাত্রীরা ভর্তি না হলে আমি কি বাড়ি থেকে ডেকে এনে ভর্তি করাবো?
উপজেলায় অনেক কলেজেই বিজ্ঞান বিভাগে ৪০/৪৫ জন করে শিক্ষার্থী আছে; অথচ সে সব প্রতিষ্ঠান এখনও এমপিও ভুক্ত হয়নি। অথচ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভূইফোঁড় এই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিভাবে এমপিও ভুক্ত হয় এবং শিক্ষকদের এমপিও বহাল থাকে তা কারোরই বোধগম্য নয়। অবিলম্বে এই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সংকট ও শিক্ষকদের ফাঁকিবাজির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার শিক্ষানুরাগী সচেতন মহল।