৮ বছরে তিনবার  এসএসসি-এইচএসসির প্রশ্ন পদ্ধতি বদল - দৈনিকশিক্ষা

৮ বছরে তিনবার এসএসসি-এইচএসসির প্রশ্ন পদ্ধতি বদল

নিজস্ব প্রতিবেদক |

২০০৯ সালে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হওয়ার পর অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে বোর্ডভিত্তিক আলাদা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এরপর চার বছর না যেতেই আবার প্রশ্ন পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে আবার সারা দেশে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এতে আট বছরে তিনবার প্রশ্ন পদ্ধতি পরিবর্তন করা হলো।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত মঙ্গলবার এক চিঠিতে সব শিক্ষা বোর্ডকে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। তবে একই চিঠিতে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করে তা কমানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বোর্ড চেয়ারম্যানদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘অভিন্ন প্রশ্নপত্রে সারা দেশে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে আমরা মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি। এই পদ্ধতিতে সম্ভাব্য যে ঝুঁকিগুলো আছে প্রথমেই তা চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

জানা যায়, ২০০৯ সালে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু হওয়ার পর সৃজনশীল বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়া হতো অভিন্ন প্রশ্নপত্রে। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপকতা রোধ করতে ২০১৪ সালে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর ফলও পাওয়া যায়। এক বোর্ডের অধীনে প্রশ্ন ফাঁস হলে শুধু ওই বোর্ডের পরীক্ষাই স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া অনেক জায়গায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ থাকলেও তা ছড়িয়ে পড়েনি। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ এখনো রয়েছে। এর পরও নতুন করে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুক্তি হলো, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হলে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে ভারসাম্য আসবে। এতে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রেও সুফল পাবে শিক্ষার্থীরা।

কিন্তু শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছেলেখেলা করছে। একেক বোর্ডে একেক রকম সিলেবাস শেষ করা হতে পারে। নানা কারণে সিলেবাসের তারতম্য হতে পারে। এতে বোর্ডগুলো প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে পারে তাদের সুবিধা অনুযায়ী। এ ছাড়া সৃজনশীল মানে একেকজন একেক রকম লিখবে। কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ মেধা থেকে লিখবে। আর পরীক্ষকরাও লেখার ধরন অনুযায়ী নম্বর দেবেন। এখন অভিন্ন প্রশ্ন পদ্ধতি হলেও মূল্যায়ন একই হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, কোনো এক বোর্ডে এক বিষয়ে পাসের হার প্রায় শতভাগ। আবার অন্য কোনো বোর্ডে সেই হার অর্ধেক। আসলে একেক বোর্ডে একেক রকমের প্রশ্ন ও মূল্যায়ন হওয়ায় নম্বরে বেশি তারতম্য হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। এ ছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁসও আগের চেয়ে কমেছে। তাই অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. এ কে এম শাহনাওয়াজ বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনো নানা বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় আছে। কারণ তারা কোনো গবেষণা ছাড়াই পরীক্ষামূলক সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে কয়েক বছর যেতে না যেতেই তা পরিবর্তন করতে হয়। আর এভাবে করতে গিয়ে তারা পরীক্ষা নিয়েও ছেলেখেলা করছে। এখন অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা হলেই যে মূল্যায়নে সমতা আসবে তা মোটেই ঠিক নয়। সৃজনশীলে শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজের মতো করে লেখে। আর একেকজন শিক্ষক নিজের মূল্যায়ন অনুযায়ী নম্বর দেন। আসলে এসব না করে শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণসহ খাতা মূল্যায়নের ওপর প্রশিক্ষণে জোর দেওয়া উচিত। ’

জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ মো: আউয়াল সিদ্দিকী বলেন, যেকোনো পদ্ধতিই এত তাড়াতাড়ি পরিবর্তনের কী দরকার? আর প্রশ্ন ফাঁসও কি বন্ধ হয়ে গেছে যে আগের অবস্থান থেকে ফিরে আসতে হবে? আসলে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তা গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করা উচিত। শিক্ষা ও পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলা উচিত, আমলাদের ইচ্ছায়  ঘন ঘন পরিবর্তন  করা উচিত নয়।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069510936737061