শিক্ষকদের র্মযাদা : মো: কামাল হোসেন - Dainikshiksha

শিক্ষকদের র্মযাদা : মো: কামাল হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ইদানিং শিক্ষকদের র্মযাদা, বেতন-ভাতা বিষয়টি একটু বেশি করেই আলোচিত হচ্ছে। কিন্তু মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বক্তব্যের পর আশা করি শিক্ষকদের র্মযাদা নিয়ে আর প্রশ্ন উঠবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শিক্ষকদের মর্যাদা সবার উপরে। শিক্ষামন্ত্রীও প্রায়ই বলে থাকেন শিক্ষকদের র্মযাদা সবার উপরে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূৃর্ণ ব্যক্তিদের প্রদত্ত মর্যাদার কারণে শিক্ষক হিসেবে আমরাও গর্বিত।

ভাবতেই ভালো লাগে শিক্ষকরা আর নাথিং নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমাজের আকুল আবেদন শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মর্যাদাও প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

ইদানিং একটি শ্রেণীর কাছে মনে হচ্ছে শিক্ষকরা পড়ান না। শুধুই প্রাইভেট টিউশনি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাদের বক্তব্য আংশিক সত্যি। কারণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব প্রাইভেট টিউশনি অতি মাত্রা পেয়েছে। কোথাও কোথাও ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে। তাই বলে গোটা শিক্ষক সমাজকে দায়ী করা যাবে না।

এখন প্রশ্ন হলো শিক্ষকরা কেনো প্রাইভেট পড়ান? শিক্ষার্থীরাই বা কেনো প্রাইভেট পড়ে?

প্রথমত- সকল শিক্ষার্থীর মেধা সমান থাকেনা। একটু পিছিয়ে পড়া বা দূৃর্বল মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ক্লাশের আগে বা পড়ে প্রাইভেট পড়ে থাকে।
দ্বিতীয়ত- সরকারের  সদিচ্ছা থাকা সত্বেও সীমিত সম্পদের কারণে শিক্ষার্থীদের আনুপাতিক হারে পর্যাপ্ত শিক্ষক দেওয়া যাচ্ছেনা।
এমন অনেক কলেজ রয়েছে যেখানে বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটির কম্বাইন্ড ক্লাশে ৩০০/৪০০ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। এমতবস্থায় একজন শিক্ষকের পক্ষে সঠিক পাঠদান অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা ক্লাশের আগে বা পড়ে প্রাইভেট পড়ে থাকে।

তৃতীয়ত- অনেক শিক্ষার্থীর বাবা-মা দুজনেই চাকুরী করে থাকেন। ফলে তারা সন্তানের এক্্রট্রা কেয়ার নিতে পারেন না। তাই তারা প্রাইভেট শিক্ষকের দ্বারস্থ হন।

চতুর্থত- প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে পাশের হারে অতিরিক্ত সহনশীলতা প্রদানের কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে কোয়ানটিটি বেড়েছে ঠিকই কিন্তুু কোয়ালিটি বাড়েনি। ফলে বিশেষ বিবেচনায় পাশ করা এসব শিক্ষার্থাীরা উচ্চমাধ্যমিকের সিলেবাস ডাইজেষ্ট করতে হিমশিম খায় এবং প্রাইভেট শিক্ষকের দ্বারস্থ হয়।

যেহেতু শিক্ষকদের বেতন-ভাতা অল্প তাই তারা অবসর সময়টুকু হাটে-বাজারে না ঘুরে বা অলস সময় না কাটিয়ে অতিরিক্ত কিছু রোজগারের আশায় ক্লাশের আগে বা পড়ে প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন। আর এটাকেই অনেকে ব্যবসা হিসেবে দেখছেন।

শিক্ষকরা হচ্ছেন সমাজের সবচেয়ে নীরিহ প্রাণী। তাদের ব্যাপারে কিছু লেখা বা বলা সবচেয়ে মামুলি ব্যাপার। কারণ তাদের প্রতিবাদের ভাষা নেই। রাষ্ট্রের বৃহত্তম পেশাজীবী গোষ্ঠী হওয়া সত্বেও তাদের নিজস¦ কোনো ব্যাংক নেই, সংবাদপত্র নেই।

এ দেশের ডাক্তাররা নিজস্ব ডিউটিতে না গিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে বসে রোগীর কিডনি খুলে বিক্রি করে দিলেও কেউ কিছু বলবে না। কারণ তারা সবকিছু ম্যানেজ করেই করে থাকে। পক্ষান্তওে একজন শিক্ষক সারা মাস প্রাইভেট পড়িয়ে ৫০০ টাকা নিলেই তা নিয়ে শোরগোঃল পড়ে যাবে।
একজন বেসরকারি কলেজের প্রভাষক বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বাবত যথাক্রমে ৫০০ ও ৩০০ টাকাসহ সর্বমোট ১৩ হাজার ৪৬৫ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। এ চিকিৎসাভাতা দিয়ে হোমিওপ্যাথিক পুড়িন্দাও কেনা যাবে না আর বাড়ি ভাড়া দিয়ে বস্তিতেও থাকা যাবেনা। অথচ ব্যাংকের একজন টি বয়ও এর চেয়ে বেশি বেতন পেয়ে থাকেন। শিক্ষকরা অজ¯্র সালাম পান পাশাপাশি ক্ষুধায়ও কষ্ট পান। বেশিরভাগ শিক্ষকই ঋণে জর্জরিত।
শিক্ষক সমাজকে পিছনে রেখে জাতির সত্যিকার উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই প্রধান মন্ত্রীর কাছে বেসরকারি শিক্ষক সমাজের আকুল আবেদন বেসরকারি শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে সোনার বাংলাকে সত্যিকার ডিজিটাল বাংলায় রূপান্তর করতে আপনার যথাযথ পদক্ষেপ একান্ত জরুরি।

মো: কামাল হোসেন
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ
জুরানপুর আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
দাউদকান্দি, কুমিল্লা

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036659240722656