দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এমপিও বন্ধ হচ্ছে মাগুরা সদর উপজেলার শত্রুজিৎপুর কলেজের অধ্যক্ষ মাহাবুবুল ইসলামের। ‘তার নাম এমপিও থেকে কেন কর্তন করা হবে না’, তার জবাব সাত কর্মদিবসের মধ্যে চেয়ে মাহাবুবুল ইসলামকে কারণ দর্শানো নোটিস পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
জানা গেছে, এলাকাবাসীর পক্ষে শত্রুজিৎপুর কলেজের অধ্যক্ষের বিভিন্ন রকমের অনিয়ম ও দুর্নিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আব্দুল আজিজ মোল্ল্যাসহ আরও ছয় জন। অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন মাগুরা জেলা প্রশাসক।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, শত্রুজিৎপুর কলেজের অধ্যক্ষ মাহাবুবুল ইসলাম কলেজে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মোতাবেক এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ ফি আদায় না করে কমিটির সিন্ধান্তের কথা বলে শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করেন। কমিটির সিন্ধান্তের কথা বলা হলেও কোন প্রকার কার্যবিবরণী দেখাতে পারেননি তিনি। প্রবেশপত্রের ফি বাবদ ২০০ টাকা ও প্রাকটিক্যালে বাবদ ১০০ টাকা আদায় করা হয়। এ বিষয়ে বোর্ডের নির্দেশনার কথা বললেও কোন নির্দেশনা দেখাতে পারেননি অধ্যক্ষ মাহাবুবুল ইসলাম। ফি আদায়ের ক্ষেত্রে কোন প্রকার রশিদ ব্যবহার করা হয়নি।
কলেজের ক্যাশবই হালনাগাদ হলেও আয় ব্যায়ের কোন হিসেব নেই। ক্রীড়া সামগ্রীর জন্য বরাদ্দ টাকা ঠিকমতো খরচ হয়নি বা কোন বিল ভাউচার দেখাতে পারেননি তিনি।
হাজিরা খাতা যথাযথ নিয়মে সংরক্ষণ করা বা আগমন ও প্রস্থানের সময় লেখা হয় না। দেরিতে কলেজে আসা বা না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের অভিযোগও সত্য। প্রতিষ্ঠানে জাতীয় দিবস যথাযথ ভাবে পালন করা হয় না। শিক্ষদের গালিগালাজ, হুমকি ধামকি ও তাদের সাথে দুর্ব্যবহার, কলেজের ডিগ্রি শাখায় চাকরির কথা বলে টাকা নেওয়া সহ সকল অভিযোগ সত্যতা পাওয়া গেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, অধ্যক্ষের আবেদন অনুযায়ী- কলেজের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রভাষক সাবিয়া সুলতানা (ইনডেক্স নং-৩০৯৫৮৩১) এবং ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বীমা বিষয়ের প্রভাষক অচিন্ত কুমার পাল (ইনডেক্স নং-৩০৯৫৮৩২) ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে প্রথম এমপিওর টাকা যথাসময়ে উওোলনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
জেলা প্রশাসকের তদন্ত প্রতিবেদনের বর্ণনা অনুযায়ী ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে বেতন ভাতার বিল সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে উপস্থাপন না করায় জনবল কাঠামোর ১৮ এর ১ এর (খ)ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
জনবল কাঠামোর ১৮ এর ১ এর (খ)ধারা অনুযায়ী কলেজের অধ্যক্ষ মাহাবুবুল ইসলামের এমপিও হতে কেন ‘তার নাম কর্তন করা হবে না’ তার জবাব সাত কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।