একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি আদায়কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে যশোরের মণিরামপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ভর্তি ফি কমানো, দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধীদের বিশেষ ছাড়সহ বিভিন্ন দাবিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এসব দাবিতে আন্দোলনকারীরা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থ অভিভাবকদের আর্থিক অস্বচ্ছলতার বিষয় বিবেচনা করে দরিদ্র, মেধাবী, প্রতিবন্ধীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ফিসহ মাসিক বেতন ও যাবতীয় খরচের বিষয়ে অবহিত করে সংশ্লিষ্ট কলেজে ভর্তির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ১ হাজার টাকার বেশি নেয়া হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের দাবি। কিন্তু সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ খামখেয়ালিভাবে শিক্ষার্থী প্রতি ভর্তি বাবদ ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং কলেজের নিজস্ব ফরম বাবদ অতিরিক্ত আরও ১৫০ টাকাসহ মোট ভর্তি খরচ ১ হাজার ৬৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া গরীব, অসহায়, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির ক্ষেত্রেও কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হচ্ছে না।
অতিরিক্ত ভর্তি ফি গ্রহণসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠে মণিরামপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস। সকাল থেকে দফায়-দফায় মিছিল সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ভর্তি ফি ১ হাজার টাকা নেয়াসহ অতিরিক্ত টাকা ফেরত এবং দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি’র বিশেষ ছাড়ের দাবিতে আল্টিমেটাম দেয়।
শিক্ষার্থী রুবায়েত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী প্রতি মোট নেয়া হয়েছে ১ হাজার ৬৫০ টাকা। কিন্তু পার্শবর্তী কেশবপুর উপজেলা সরকারি কলেজে ১ হাজার টাকা, কলারোয়া সরকারি কলেজে ৯৯০ টাকা নেয়া হচ্ছে। কি কারণে আমাদের কলেজে ভর্তি ফি বেশি নেয়া হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছি না।
কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান দ্বীপ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, চলমান কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) সংকটে অভিভাবকদের আর্থিক অস্বচ্ছতার কথা বিবেচনা করে শিক্ষাবান্ধব সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশনা না মেনে মণিরামপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জি. এম রবিউল ইসলাম ফারুকীর খামখেয়ালি পনায় অতিরিক্ত ভর্তি ফি গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে আরও বলেন, দরিদ্র-মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের থেকে ভর্তি ফিস বাবদ আদায়কৃত অতিরিক্ত অর্থ বুধবার সকাল ১০ টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের নিকট ফেরত দিতে হবে। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সকল নিয়ম মেনে বোর্ড নির্ধারিত ফিস নিয়েই ভর্তি কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচীর ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ জি এম রবিউল ইসলাম ফারুকী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের যৌক্তিকতার প্রশ্ন তুলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সরকারি নিয়ম মেনেই ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।