বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় বর্তমান সময়ে চরম অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। বেসরকারি শিক্ষকরা আজ অভিভাবকের সংকটে। তাদের কেউ নেই দেখভাল করার। আছে শুধু কীভাবে বেসরকারি শিক্ষকদের ঘাড়ে বোঝা চাপানো যায়; সেই অপচেষ্টা। তাইতো আজ বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় নেমে এসেছে অস্থিতিশীলতা। বাস্তবতার প্রেক্ষিতে আজ এক দাবি বেসরকারি শিক্ষকদের অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধের সুস্পষ্ট ঘোষণা চাই। সরকারি চাকরিজীবীদের কাছ থেকে কতটুকু অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে কত শতাংশ কর্তন করা হয় জানা নেই। কিন্তু সরকারি চাকরিজীবীরা যা সুযোগ-সুবিধা পান বেসরকারি শিক্ষকরা তা থেকে সম্পূর্ণ রূপে বঞ্চিত। এই অসম নীতি শিক্ষাব্যবস্থার জন্য ঠিক নয়।
আজ সারা বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষক সমাজ জেগে উঠেছে। জেনারেল শাখার পাশাপাশি কারিগরি শাখাও আজ জেগে উঠেছে অতিরিক্ত কর্তন বাতিলের দাবিতে। শিক্ষক সমাজ আজ রাস্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। শিক্ষকরা মানববন্ধন করছেন। অতিরিক্ত কর্তন বন্ধ না হলে শিক্ষকরা অনশনের মতো কর্মসূচি এমনকি প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলানোর মতো কর্মসূচিও দেওয়ার কথা ভাবছেন। এ রকম আন্দোলন কোনো দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য শুভ লক্ষণ নয়। তাই অতিরিক্ত কর্তন বন্ধসহ ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিক্ষাব্যবস্থার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বেসরকারি শিক্ষকদের পেনশনের আওতায় এনে চাকরির শেষ সময়টুকু সুস্থভাবে বাঁচতে দেন। শেষ সময়ে এসে মানবেতর জীবন-যাপন করা সত্যিই বেদনাদায়ক। তাইতো আজ দেখা দিচ্ছে শিক্ষক আন্দোলনের বিস্ফোরণ।
এই বাস্তবতার ফলে আজ শিক্ষকরা রাজপথে নেমে এসেছে। আগামী ১ মে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নামছে বাশিস (নজরুল) লিয়াজোঁ ফোরামসহ পাঁচটি সংগঠন। অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধসহ পূর্ণাঙ্গ ইদ বোনাস, চিকিৎসা ভাতা, বদলি এবং সমগ্র বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে। ১ মে বেসরকারি শিক্ষক সমাজ জাতীয় প্রেসক্লাবে অবস্থান নিবে এ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বেসরকারি শিক্ষকরা আর ঘরে ফিরে যাবে না। শিক্ষকদের একটাই স্লোগান, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শিক্ষকদের ওপর অবিচার মানি না, মানব না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ, আপনি বেসরকারি শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করুন এবং সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করুন। শিক্ষক সমাজ আপনার সিদ্ধান্তের ওপর চেয়ে আছে।
লেখক: সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, বাশিস ( নজরুল)।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]