রাজশাহীর পুঠিয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাসে উপস্থিত থাকেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে অধ্যক্ষের কারণে গোটা কলেজে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অধ্যক্ষের সঙ্গে কলেজের এক শিক্ষিকার আপত্তিকর ছবিসহ নানা অপকর্মের কাহিনী ফেসবুক পেজে ঘুরছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর আকস্মিক কলেজ পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ওলিউজ্জামান। এ সময় তিনি কলেজের অধ্যক্ষসহ এক শিক্ষিকাকে উপস্থিত না পেয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসেন। এর আগেও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি তদন্ত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আলাদা প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছিল।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষের সঙ্গে বিশেষ সমঝোতা থাকায় পুঠিয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষক ঠিকমতো কলেজে আসেন না। এলেও ইচ্ছামতো ক্লাস নিয়ে হাজিরা দিয়েই চলে যান। তাঁদের মধ্যে একজন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাকলি ভদ্র। তিনি ঢাকায় থাকেন। ঢাকায় থেকে মাঝেমধ্যে কলেজে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যান। তাঁর ক্লাস কখনো পায়নি শিক্ষার্থীরা।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ইউএনওর আকস্মিক পরিদর্শনের পর কিছুদিন নিয়মিত ক্লাস হলেও এক মাস ধরে ফের অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরা। ফলে ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছে না কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ কারণে তাদের পড়াশোনায় ভাটা পড়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে ২৬ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তে এসে সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপসচিব নুসরাত জাবীন বানুর স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, কলেজ অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমান ওই কলেজের প্রভাষক আব্দুর রউফের জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করে তাঁর বেতন-ভাতার আট লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
আব্দুর রউফ অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমানের শ্যালক হন। তিনি চার বছর আট মাস কলেজে অনুপস্থিত থাকলেও অধ্যক্ষ ফয়েজুর তাঁর ভুয়া স্বাক্ষর ব্যবহার করে টাকা তুলতেন। প্রতিবেদনে আব্দুর রউফের নামে উত্তোলন করা টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
অন্যদিকে আব্দুর রউফ ও অধ্যক্ষ ফয়েজুর রহমান দুজনেরই বেতন-ভাতা সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এ ঘটনার পরও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন তাঁরা।