নেত্রকোনার মদন উপজেলার জোবাইদা রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনের ওপর শনিবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে কিছু যুবক হামলা চালিয়ে মারধর করেছে। হামলাকারীরা তাকে জোর করে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় ও হত্যার হুমকি দেয়। ওইদিন রাতেই তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সন্ধ্যায় আটপাড়ার অভয়পাশা বাজারে বিক্ষোভ করা হয়েছে। অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রোববার দু'জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৪-৫ জনকে আসামি করে মদন থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।
অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন জানান, মদনের বাড়িবাদেড়া গ্রামের মুক্তল হোসেনের ছেলে আল আমীন ও হুমায়ুন কবির তাদের ভাইকে জোবাইদা রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজে চাকরি দেওয়ার জন্য তার ওপর চাপ প্রয়োগ করছিল। চাকরি না হওয়ায় হামলাকারীরা তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। শনিবার কলেজ থেকে বের হয়ে রিকশায় উঠছিলেন তিনি। এ সময় আল আমীন, হুমায়ুন কবির ও অজ্ঞাতপরিচয় ৪-৫ জন রামদা, চাপাতি ও রড হাতে তার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং ৫ লাখ টাকা দিতে হবে বলে পাঁচটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য বলে। জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। হামলাকারীরা তাকে টেনেহিঁচড়ে রিকশা থেকে নামিয়ে মারধর করে।
মদন থানায় মামলা করতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে মামলা বা অভিযোগ না করার কথা বলেন। নিরুপায় হয়ে তিনি জেলা শহরের বাসায় ফিরে যান। পরে তাকে রাতেই নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবরটি তার গ্রামের বাড়ি জেলার আটপাড়ায় ছড়িয়ে পড়লে শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জেলার মদন-নেত্রকোনা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে আল আমীন ও হুমায়ুনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৪-৫ জনকে আসামি করে মদন থানায় মামলা করেন।
মদন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রমিজুল হক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। হামলার আলামত জব্দ করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে মদন থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য ওসিকে বলা হয়েছে।