অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফাঁসলেন উপাধ্যক্ষ, এমপিও স্থগিত - দৈনিকশিক্ষা

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফাঁসলেন উপাধ্যক্ষ, এমপিও স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নিজ কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ করেছিলেন উপাধ্যক্ষ।  কিন্তু, ঘটনা  তদন্তে বেরিয়ে আসে শুধু অধ্যক্ষ নয়, অভিযোগকারী উপাধ্যক্ষের নিয়োগও অবৈধ। ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুর সদর উপজেলার জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজে। কলেজটির অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

অবৈধ নিয়োগ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জামালপুর সদর উপজেলার জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষসহ তিন জন শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ শিক্ষকরা হলেন কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম তফিকুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ মো. সুরুজ্জামান এবং প্রভাষক এস এম আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ তিন শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করার নির্দেশনা শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে তাদের এমপিও ‘কেন স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে না’ তা জানতে চেয়ে এ তিন শিক্ষককে শোকজ করতে শিক্ষা অধিপ্তরকে বলেছে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। মন্ত্রণালয় সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলার জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম তফিকুল ইসলাম অবৈধভাবে নিয়োগ নিয়ে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন বলে শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানটির উপাধ্যক্ষ মো. সুরুজ্জামান। উপাধক্ষের করা অভিযোগ আমলে নিয়ে তা গত ১৮ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায় শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে অভিযোগটি তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়। অভিযোগটি তদন্ত করে ইতোমধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তদন্তে অধ্যক্ষসহ ফেঁসে গেছেন অভিযোগকারী উপাধ্যক্ষও।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অধ্যক্ষ এ কে এম তফিকুল ইসলাম বিধি বহির্ভূতভাবে এমপিওভুক্ত হয়েছেন। প্রভাব খাটিয়ে সিনিয়র শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নীতিমালা ভঙ্গ করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি। এমনকি ভুয়া নিবন্ধন সনদধারীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন অধ্যক্ষ। তদন্তে কলেজের অভ্যন্তরীণ ও বোর্ড পরীক্ষা বিধি বহির্ভূতভাবে গ্রহণের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্তে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। অধ্যক্ষ তফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. সুরুজ্জামান। তদন্তে ফেঁসে গিয়েছেন তিনিও। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মো. সুরুজ্জামান উপাধ্যক্ষ পদে যোগদানের আগে বিএম শাখার প্রভাষক পদে কর্মরত ছিলেন প্রভাষক পদ থেকে পদত্যাগ না করেই উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেছেন এবং বিধি বহির্ভূতভাবে প্রভাষক পদের বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন তিনি। 

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কলেজের প্রভাষক এস এম আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে অশোভন আচরণ করেছেন এবং অশোভন আচরণের বিষয়ে অধ্যক্ষ তাকে শোকজ করলেও জবাব প্রদান করেননি তিনি। যা দায়িত্ব অবহেলার সামিল। 

তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে, এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী জামালপুর সদর উপজেলার জিয়েউর রহমান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম তফিকুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ মো. সুরুজ্জামান এবং প্রভাষক এস এম আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদের এমপিও স্থগিত করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। এছাড়া ‘কেন এই তিন শিক্ষকের এমপিও স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হবে না’ সে মর্মে তিন শিক্ষককে শোকজ করতে বলা হয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তরকে।

 

আরও পড়ুন: 

এমপিও বাতিল হচ্ছে জিয়াউর রহমান কলেজের

শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক প্রতিনিধিদের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা জারি

জামালপুর জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজে ডিআইএ কর্মকর্তাদের ঘুষ বাণিজ্য!

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034620761871338