বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ আফছার আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে কলেজ তহবিলের অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে ঘাটতি শোধের নামে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ এ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ এবং নানা খাতে ব্যয় দেখিয়ে আরও দেড়লাখ টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে কলেজের আয়-ব্যয়ের হিসাব গর্ভনিং বডির সভায় উত্থাপন না করায় কলেজ সভাপতি সৈয়দ মুজিবুর রহমান অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
এছাড়াও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে ক্ষমা পাওয়ার জন্য একটি রেজুলেশন লিপিবদ্ধ করে কোনো সভা ছাড়াই অনুমোদন চেয়েছেন এ অধ্যক্ষ, যার সভা নম্বর দেখিয়েছেন ২৪০। কিন্তু সভাপতি, শিক্ষক প্রতিনিধি এবং অভিভাবক সদস্যদের বাধার কারণে সেটি আর পাস হয়নি।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষের দিকে। সভাপতিও বর্তমানে ঢাকায় হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এ সুযোগে গভর্নিংবডির কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা সভাপতিকে অবহিতকরণ ছাড়াই শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান।
অধ্যক্ষের এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে বর্তমান প্রতিনিধিরা বরিশাল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন, যার নম্বর ১৩৬/২০১৯। মামলার শুনানী শেষে সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য বিচারক অপেক্ষমাণ রেখেছেন। কিন্তু নির্বাচনের তারিখ ঘনিয়ে আসায় বাদী পক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান গত রোববার (২১ জুলাই) ই-মেইলে অধ্যক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে নির্বাচন স্থগিত রাখার অনুরোধ করেন।
কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি প্রভাষক মনিরুল ইসলাম, প্রভাষক সরদার মনিরুজ্জামান এবং প্রভাষক মানসী বিশ্বাস আইনজীবি আজাদ রহমানের মাধ্যমে এই লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন।
এর পাশাপাশি ২২ জুলাই দুইজন শিক্ষক প্রতিনিধি নোটিশের কপি নিয়ে গেলে অধ্যক্ষ তা রাখতে অস্বীকৃতি জানান এবং ২২ জুলাই নির্বাচন সম্পন্ন করেন।
এ সব অভিযোগের বিষয়ে সৈয়দ আফছার আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন, এরকম কোনো বিষয় তার জানা নেই। আর অর্থ আত্মসাতের বিষয়টা হাস্যকর। তবে আদালতে যদি মামলা হয়ে থাকে সেই কাগজপত্র তিনি হাতে পাননি। হাতে পেলে বিষয়টি সম্পর্কে বলতে পারবেন।