রাজশাহীর মহানগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ জহুরুল আলম রিপনের বিরুদ্ধে এক নারী শিক্ষককে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার বিচার চেয়ে গত রোববার (২৪ মার্চ) কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ওই নারী শিক্ষক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৫ এপ্রিল ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ সামনে আসায় ওই নারী শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেন অধ্যক্ষ। তাই চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন করেন তিনি। ওই নারী শিক্ষকের অভিযোগ, অধ্যক্ষ কেবল তারই নয়, আরো অনেক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছেন। তিনি তার শাস্তি দাবি করেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৫ এপ্রিল অধ্যক্ষ তার নিজ বাড়িতে তাকে ল্যাপটপ আনতে পাঠান। সরল বিশ্বাসে গিয়ে দেখেন, বাড়ির সদর দরজায় তালা দেয়া। ওই সময় অধ্যক্ষকে পেছনে দাঁড়ানো দেখেন তিনি। এ সময় কৌশলে অধ্যক্ষ তাকে তার ঘরে নিয়ে যান। পরে তাকে কুপ্রস্তাব দেন। নানা প্রলোভনও দেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি তিনি। এ সময় তিনি ধর্ষণেরচেষ্টা করেন। তবে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন তিনি।
ঘটনার কিছুদিন পর অধ্যক্ষ তাকে কলেজে ডেকে উল্টো প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেন। একই সাথে কলেজে একটি কম্পিউটার প্রদানের শর্ত দেন। কিন্তু কোনো শর্তই তিনি মানতে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত তাকে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে নেন অধ্যক্ষ।
এর আগে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারি নিজ অফিস কক্ষেই এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা করে অধ্যক্ষ রিপন। পরদিন থেকেই শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে নামে এলাকাবাসী। ওই ছাত্রীসহ আরও দুই ছাত্রী এবং এক নারী শিক্ষক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেন। ৮ মার্চ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করে ওই প্রতিষ্ঠানেরই এক ছাত্রী। ওই দিনই অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৩ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত বছরের ৪ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বর্তমানে জামিনে রয়েছেন অধ্যক্ষ।
এদিকে, অধ্যক্ষকে স্বপদে ফেরাতে তৎপর হয়ে উঠেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। অধ্যক্ষ কলেজে ফিরছেন- এমন খবরের ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কিত নির্যাতনের শিকার ছাত্রী-নারী শিক্ষক।
তবে নারী শিক্ষকের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেন অধ্যক্ষ জহুরুল আলম রিপন। তার দাবি, তাকে ফাঁসাতে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। তাছাড়া ওই নারী শিক্ষক ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। আর পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত এখনো পাননি বলে জানান অধ্যক্ষ।
এ বিষয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজেরে সভাপতি জাহিদ নেওয়াজ কোনো কথা বলতে রাজি হননি।