এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধন করে এমপিওভুক্তির দাবি তুলেছন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজের অনার্স মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। রোববার (৩০ জুন) দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় বরিশাল বিভাগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২৭টি বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের প্রচলিত জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান শিক্ষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা জানান, গত বছরের মাঝামাঝি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু স্কুল-কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে কর্মরত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সুযোগ রাখা হয়নি। এরফলে এমপিও বঞ্চিত হয়েছেন ২০১টি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে কর্মরত সাড়ে তিন হাজার শিক্ষক। অথচ মাদরাসা জনবল কাঠামোতে মাস্টার্স সমতুল্য কামিল পর্যায় পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শিক্ষকরা বলেন, সাড়ে তিন হাজার শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করতে বছরে ১০৪ কোটি টাকা প্রয়োজন। খরচের খাত খুঁজে না পাওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিবছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফিরিয়ে দেয়া হয়। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতিতে ডিগ্রি পাসকোর্স তুলে দিয়ে অনার্স মাস্টার্স কোর্স চালুর কথা রয়েছে। বর্তমানে অনার্স কোর্সেই বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
শিক্ষকরা আরও জানান, জটিলতা সৃষ্টির পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কর্মকর্তার জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজসমূহে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই। পরে গত ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও দেয়ার আবেদনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও আজও সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাই, এমপিওভুক্তির ঘোষণা দাবি করেছেন অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা জানান, সারাদেশের ২০১টি কলেজের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ২৭ টি কলেজ রয়েছে। কলেজগুলোতে প্রায় এক হাজার শিক্ষক পাঠদান করছেন। ওইসব শিক্ষকরা মাত্র তিন হাজার টাকা থেকে তিন হাজার পাঁচশ টাকা সম্মানী পাচ্ছেন। যা দিয়ে একজন শিক্ষকের পক্ষে পরিবার নিয়ে জীবনযাপন করা অসম্ভব। তাই শিক্ষকদের কেউ ইজিবাইক চালান, কেউ আবার শ্রমিককের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব শিক্ষকদের কলেজে ভর্তি, ফরম পূরণের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এ সময় টাকা পেলেই শিক্ষকদের কয়েক মাসের বকেয়া টাকা পরিশোধ করে কলেজ কতৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেসরকারি অর্নাস-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের বরিশালের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান মনি। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মো. ইউনুস শরীফ, জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. রমজান আলী নয়ন, মৃত্তিকা দাস, নুসরাত রুমানা, মিজানুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।