অনিয়ম এড়াতে তড়িঘড়ি করে বিশেষ প্যাকেজে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের টাকা দেয়না বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড কর্তৃৃপক্ষ। ২৬ জুলাই রাতে এক প্রশ্নের জবাবে বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। করোনার মধ্যে ঈদুল ফিতরের আগে এক হাজারেরও বেশি শিক্ষককে কল্যাণট্রাস্টের টাকা দেয়া হয়েছে। আবার ২৬ জুলাই কল্যাণট্রাস্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় আর ৮০২ জন শিক্ষককে ঈদুল আজহার আগেই টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে দৈনিক শিক্ষার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় অবসর সুবিধা বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। জানতে চাওয়া হয় ক্যলাণট্রাস্ট টাকা দিলেও তারা কেন পারছেন না। হাজার হাজার শিক্ষক আবেদন করে বছরের পর বছর ঘুরছেন কিন্তু টাকা পাচ্ছেন না। করোনাকালে দুই ঈদের আগেই বিপুল সংখ্যক শিক্ষক কল্যাণট্রাস্টের টাাকা পেয়েছেন। অথচ দুটি প্রতিষ্ঠানেরই প্রধান পদে নিযুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব। দ্বিতীয় প্রধান পদে রয়েছেন দুইজন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।
২৬ জুলাই রাতে অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব শরীফ সাদী দৈনিক শিক্ষার প্রশ্নের জবাবে বলেন, “যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে তড়িঘড়ি করে বিশেষ প্যাকেজে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের টাকা দিতে গেলে অনিয়মের সম্ভাবনা থাকে। অতীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। তাই অবসর সুবিধা বোর্ড তড়িঘড়ি করে কাউকে টাকা দেবে না।”
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, মৃত শিক্ষকের বৈধ উত্তরাধীকারী ও অসুস্থ এবং মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকের আবেদন আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করি। তবে, সেক্ষেত্রেও যথাযথ অডিট করেই দেয়া হয়। তড়িঘড়ি করে কোনও প্যাকেজ অবসর সুবিধা বোর্ড দেবে না। অনিয়মরোধে এ ব্যবস্থা।
বর্তমানে অবসর কর্তৃপক্ষের হাতে সাড়ে তিনশ’র মতো তালিকা রয়েছে যাদেরকে ঈদের ঠিক পরপরই দিতে পারবেন বলে জানান শরীফ সাদী। তিনি বলেন, “মৃত ও অসুস্থদের আবেদনের মধ্যেও কিছু মারাত্মক গলতি ধরা পড়েছে। তাই আমরা সতর্ক।”
দের আগে ৮০২ শিক্ষককে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত
আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই অবসরপ্রাপ্ত ৮০২ জন বেসরকারি শিক্ষকের কল্যাণ সুবিধার মোট ৩৩ কোটি ছাড় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রোববার (২৬ জুলাই) ট্রাস্ট থেকে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ট্রাস্টের উপপরিচালক আবুল বাশার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদুল আজহার আগেই ৮০২ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে ৩৩ কোটি ৫ লাখ ৩৪ হাজার ১২৫ টাকা পৌঁছে দেয়াসহ করোনা মহামারির মধ্যে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে মোট ৭২ কোটি ৭১ লাখ ৫১ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ মো.শাহজাহান আলম সাজু নিজে এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে।
অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর বরাতে বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ৮০২ জনের তালিকায় ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মে এবং জুন মাসের নিয়মিত আবেদন ছাড়াও মৃত, অসুস্থ, মুক্তিযোদ্ধাসহ পরিপূরক বিশেষ আবেদন রয়েছে। ইতোমধ্যেই। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের কল্যাণ সুবিধার টাকা বিএফটিএনের মাধ্যমে যার যার ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে, কোন ৮০২ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে টাকা দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি ট্রাস্টের ওয়েবসাইটেও দেয়া হয়নি।