প্রায় আড়াই বছর ধরে কর্মস্থলে যাননি ঢাকা কলেজের সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানা। অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা পেয়েছেন তিনি। অননুমোদিতভাবে কলেজে না গিয়েও কীভাবে বেতন-ভাতা তুলেছেন সেই প্রশ্ন তুলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সরকারি অর্থের অপচয় ও এ ঘটনার সাথে জড়িতদের সম্পর্কে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মাউশির কাছে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। তদন্ত শুরু করেছে দুদক।
দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, উদ্ভিদবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানাকে ঢাকা কলেজে বদলি করা হয় ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে। এরআগে তিনি শিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি কলেজ শাখার সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তারও আগে গৃহকর্মী পিটিয়ে জেল খেটেছেন। ওএসডি ছিলেন।
শারমিনের সহকর্মীরা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে এমন দাবি করে আসা এই কলেজ শিক্ষক ঢাকা কলেজের মতো কলেজে বদলির বিষয়টিও মেনে নিতে পারেননি। একারণে বদলির পরেও নতুন কর্মস্থলে যাননি তিনি। চেষ্টা করেছেন শিক্ষা অধিদপ্তর, নায়েম অথবা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে (ডিআইএতে) বদলি হতে। বদলি ঠেকিয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা, এমন কথা রটেছে শিক্ষা প্রশাসনে।
বার বার চেষ্টা করেও কাঙ্খিত বদলি হতে পারেননি আলোচিত শারমিন সুলতানা। এভাবেই চলে যায় প্রায় আড়াই বছর। নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের দিন যখন নিশ্চিত হয় যে নুরুল ইসলাম নাহিদ আর শিক্ষামন্ত্রী থাকছেন না, তার একদিন পরেই ঢাকা কলেজে উপস্থিত হন শারমিন সুলতানা। এরপর থেকে কলেজের চাকরিতে কিছুটা স্থির হয়েছেন তিনি।
বছরের পর বছর অননুমোদিতভাবে কলেজে অনুপস্থিত থেকেও কীভাবে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলেছেন, এতে সরকারি অর্থের অপচয় এবং দোষীদের তথ্য জানতে চেয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে দুদক। গত সপ্তাহে শিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি কলেজ শাখায় এই চিঠি পৌঁছায়। সহকারী পরিচালক রাহাত মাসুম শারমিন সুলতানার ওই সময়ের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে শারমিন সুলতানার বিষয়ে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ঢাকা কলেজের কর্তৃপক্ষের মাঝে। প্রায় আড়াই বছর অননুমোদিতভাবে উপস্থিত না থাকার পরেও তাকে বেতন-ভাতা দেয়ার বিষয়ে কলেজের যতটুকু সম্পৃক্ততা ছিল সেবিষয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয় কিনা তা নিয়ে দুর্ভাবনায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ।