রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার কলেজ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে অনুমোদন ছাড়াই। এমনকি স্কুল ভবনে কলেজের কার্যক্রম চালানোর ব্যাপারেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা বোর্ড থেকে কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি। ভিকারুননিসার পারফরমেন্স অডিটে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। কমিটির প্রতিবেদন দৈনিকশিক্ষা ডটকমের হাতে রয়েছে।
জানা গেছে, ভিকারুননিসার বসুন্ধরা শাখায় কলেজ চালু করা হয় গতবছর। বর্তমানে ওই শাখার স্কুল ভবনেই দুইশতাধিক কলেজ শিক্ষার্থীর ক্লাস নেয়া হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীর জন্য নিয়োজিত আছেন ৮ জন প্রভাষক। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই কলেজ শাখার কোন অনুমোদন নেই। পনেরো বছর আগে বসুন্ধরায় নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল খোলার অনুমতি দিয়েছিল ঢাকা বোর্ড। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি অমান্য করে দীর্ঘদিন ধরে মাধ্যমিক স্কুল ও গতবছর থেকে কলেজ কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, ভিকারুননিসার বসুন্ধরা শাখায় ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজ শাখা চালু করা হয়। কিন্তু স্কুল ভবনে কলেজ পরিচালনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ঢাকা বোর্ড থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। পারফরমেন্স অডিটে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষকে বসুন্ধরা শাখার নিজস্ব জমিতে একটি নিম্নমাধ্যমিক স্কুল খোলার অনুমতি দেয় ঢাকা বোর্ড। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সে অনুমোদনেই বসুন্ধরা শাখায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছিল প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ জুলাই বসুন্ধরা শাখার স্কুল বিল্ডিংয়ে কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডি। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করে বসুন্ধরা শাখার কলেজ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে স্কুলের ভবনেই। অনুমোদনহীন বসুন্ধরা শাখার কলেজে বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা দুইশতাধিক। এ শিক্ষার্থীদের পাঠদানে রয়েছেন ৮জন প্রভাষক। কিন্তু ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক পরিপত্রের নির্দেশনা অনুসারে নতুন কলেজ খোলার আগে শিক্ষা বোর্ড থেকে অনুমোদন নিতে হয়। তবে, বসুন্ধরা শাখায় কলেজ খুলতে ঢাকা বোর্ড থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষ।
অবশ্য, অনুমোদন ছাড়া বসুন্ধরা শাখায় মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ পরিচালনা করায় ভিকারুননিসার গভর্নিং বডি বা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেনি তদন্ত কমিটি বা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রতিবেদনে, বসুন্ধরা শাখার কলেজ পরিচালনায় ঢাকা বোর্ডের অনুমোদন নেয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কমিটির সুপারিশের সাথে একমত পোষণ করেছেন।