অনুমোদনহীন শাখায় নিয়োগবিহীন এমপিওভুক্ত শিক্ষক! - দৈনিকশিক্ষা

অনুমোদনহীন শাখায় নিয়োগবিহীন এমপিওভুক্ত শিক্ষক!

বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধি |

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের কোয়ালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্তিত্বহীন এক শিক্ষকের নামে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুলে আমজাদ হোসেন নামের কোনো শিক্ষক না থাকলেও ইনডেক্স ও ব্যাংক হিসাব নম্বর ব্যবহার করে ৬ বছর ধরে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান প্রামাণিক। 

এ ঘটনায় ভুয়া শিক্ষকের নামে বেতন ভাতা উত্তোলন বন্ধ করতে এবং এ পর্যন্ত সরকারি কোষাগার থেকে অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত সমুদয় টাকা উদ্ধারের দাবিতে মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগটি করেছেন চণ্ডীপুর গ্রামের মৃত কোকাই ম-লের ছেলে ওয়াজেদ আলী। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, বাগমারা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, বাগমারা এবং রাজশাহী জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরেও পৃথকভাবে অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, বাগমারার কোয়ালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান প্রামাণিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে ধোকা দিয়ে কোনো প্রকার নিয়োগ ছাড়াই জনৈক আমজাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির সার্টিফিকেট শিক্ষা অধিদপ্তরে দাখিল করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে স্কুলের অনুমোদনহীন শাখা পদে ওই ভুয়া শিক্ষকের নামে এমপিওভুক্ত হয়ে যায়। এরপর থেকেই ওই ভুয়া শিক্ষকের নামে আসা বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছেন প্রধান শিক্ষক। প্রকৃতপক্ষে কোয়ালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে কোনো শাখার অনুমোদন নেই।এমনকি আমজাদ হোসেন নামের কোনো শিক্ষক কর্মরত নেই। অথচ কোয়ালীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কোড নং ৮৬০২২০১৩০৪ এর এমপিও শিটের তালিকায় ওই ভুয়া শিক্ষকের নামে (ইনডেক্স নং ১০৩১৭৭৫) ব্যাংক হিসাব (নং ৩৪০১৭৯২৯) খোলা হয়েছে। উক্ত ইনডেক্স ও হিসাব নম্বরের মাধ্যমে প্রাপ্যতাবিহীন পিয়ন পদে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে নিয়োগ পাওয়া একজনের নাম (ননএমপিও আমজাদ হোসেন প্রাং, জন্ম তারিখ: ১৩/০৫/১৯৭৮ইং, শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম শ্রেণি) ব্যবহার করে সোনালী ব্যাংক ভবানীগঞ্জ শাখা থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেছেন, আমার বিদ্যালয়ে কোনো শাখার অনুমোদন  নেই। আমজাদ হোসেন নামে কোনো শিক্ষকও কর্মরত নেই। তবে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে আমজাদ হোসেন প্রাং নামে একজন পিয়ন নিয়োগ দেওয়া হলেও প্রাপ্যতা না থাকায় আজো তার বেতন হয়নি। এ কারণে অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমজাদ হোসেন নামে এক শিক্ষকের সার্টিফিকেট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তরে দাখিল করে তার নামে এমপিওভুক্ত করা হয়। তবে শিক্ষকের স্কেল বেতন আসলেও তা থেকে পিয়নের স্কেলে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে কিছু টাকা অএমপিওভূক্ত পিয়ন আমজাদ হোসেনকে দেওয়া হয়। আর বাকি টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধসহ বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।

প্রাপ্যতাবিহীন পিয়ন পদে নিযোগকৃত আমজাদ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে আমাকে কিছু টাকা দিয়ে থাকেন। আর এ নিয়ে কোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে সেই টাকা ফেরত দিতে হবে মর্মে ৩০০ টাকা মূল্যের নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মোস্তাফিজুর রহমান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের এ ধরণের কর্মকাণ্ড কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা ক্ষমার অযোগ্য এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে চরম প্রতারণা। এই অপরাধের জন্য তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিউল ইসলাম দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, ভুয়া শিক্ষকের নামে অবৈধভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলন বন্ধ করতে এবং এ পর্যন্ত ওই ভুয়া শিক্ষকের নামে যে পরিমাণ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে তা উদ্ধারের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা  নেয়া হবে।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00699782371521