অপহৃত মাদরাসাছাত্রের লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ফুফাতো ভাই - দৈনিকশিক্ষা

অপহৃত মাদরাসাছাত্রের লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ফুফাতো ভাই

গাজীপুর প্রতিনিধি |

মামা মনির হোসেনের দোকানে চাকরি করতেন বনি আমিন। মামি পিয়ারা বেগম এটা মেনে নিতে পারতেন না। বিভিন্ন সময়ে মামি তাঁকে বকাঝকা করেছেন। ফলে সেখানে বনি আমিন চাকরি করতে পারেননি। এ নিয়ে মামির ওপর ক্ষোভ ছিল বনির। পরবর্তী সময়ে বেকার থাকায় ১২-১৩ হাজার টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন বনি। মামির ওপর প্রতিশোধ এবং ঋণ পরিশোধ করতেই মুক্তিপণের জন্য মামাতো ভাই মাদরাসা ছাত্র মো. ইব্রাহিমকে (১০) অপহরণ করেন তিনি। রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে অপহরণ করে গাজীপুরে এনে গলাটিপে হত্যা করেন তাকে। 

হত্যার পর বনি আমিন মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েন। লাশ উদ্ধারের পর ইব্রাহিমের জন্য কান্নাকাটি, জানাজা ও দাফনেও অংশ নেন বনি। র্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর স্বীকারোক্তিতে এমন দাবিই করেছেন তিনি।

লাশ উদ্ধারের ১৫ ঘণ্টার মধ্যে রবিবার রাতে মামার ঢাকার হাজারীবাগের বাসা থেকে বনি আমিনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১-এর গাজীপুর ক্যাম্পের একটি দল।

আনুষঙ্গিক ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে র্যাব নিশ্চিত হয় যে বনিই এ খুনের সঙ্গে জড়িত। পরে গ্রেফতারের পর বনি অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ও হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। সোমবার দুপুরে র্যাব বনিকে নিয়ে নিহত ইব্রাহিমের বই, খাতা-কলমসহ মাদরাসার ব্যাগ নগরীর সালনা এলাকার একটি ঝোপ থেকে উদ্ধার করে। সোমবার দুপুরে ক্যাম্পে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন গাজীপুর ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন। 

ঘাতক বনি আমিন (২৪) বরগুনা সদরের মাইঠা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। আগে মামার হাজারীবাগের ক্রোকারি দোকানে চাকরি করলেও গত সাত-আট মাস ধরে তিনি ঢাকার মুগদা থানার মাণ্ডার ডিয়ার আলী সড়কের একটি বাসায় থেকে রড মিস্ত্রির কাজ করতেন।

বনি জানান, ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ৫ মার্চ দুপুরে মাদরাসায় গিয়ে দেখা করে মামাতো ভাই ইব্রাহিমকে জানান তার বাবা মনির হোসেন ঢাকার বাইরে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার মা পিয়ারা বেগম সেখানে চলে গেছেন। ইব্রাহিমকে বাবার কাছে নিয়ে যেতে তাকে পাঠানো হয়েছে। 

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাসে এসে তারা গাজীপুর চৌরাস্তায় নামে। সেখান থেকে সালনার ১০ তলা গার্মেন্টের কাছে যায়। ওখানে যাওয়ার পর সন্ধ্যা হয়ে যায়। হত্যা করার মতো নির্জন জায়গা না পেয়ে ইব্রাহিমের মাদরাসার ব্যাগটি ঝোপে ফেলে হেঁটে রেললাইন ধরে পশ্চিম দিকে এগোতে থাকে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে মীরেরগাঁও পৌঁছে একটি নির্জন পুকুরপারে ইব্রাহিমকে গলাটিপে হত্যা করেন। 

লাশ পুকুর পালে ফেলে দেন। পরে একটি মসজিদে এশার নামাজ পড়ে ঢাকার ভাড়া বাসায় ফিরে আসেন। পরদিন শুক্রবার দুপুরের পর অপহরণকারী সেজে মামার কাছে ফোন করে ইব্রাহিমের মুক্তির বিনিময়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। ২৫ হাজার টাকায় রফা করে ওই দিন রাতে বিকাশে ১০ হাজার টাকাও নেন বনি। 

বাকি ১৫ হাজার টাকা রবিবার দেওয়ার কথা ছিল। শনিবার বাসায় গিয়ে মামা-মামিকে সান্ত্বনা ও ইব্রাহিমের জন্য কান্নাকাটি করেন। পরে বিকাশে নেয়া টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা ঋণ পরিশোধ করেন। রবিবার সকালে পুলিশ ইব্রাহিমের লাশ উদ্ধার করে। 

গলায় থাকা মাদরাসার পরিচয়পত্র থেকে ঠিকানা নিয়ে পুলিশ ইব্রাহিমের মা-বাবাকে জানিয়ে দিলে মুক্তিপণের বাকি ১৫ হাজার টাকা পাননি বনি। রবিবার রাতে হাজারীবাগে জানাজায় শরিক হয়ে দাফনেও অংশ নেন তিনি।

র্যাব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, রবিবার শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর র্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করে। প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হন হত্যার সঙ্গে বনি জড়িত। লাশ দাফন শেষে রাত রবিবার ১২টার দিকে বনিসহ সবাই ইব্রাহিমের বাসায় অবস্থান করছিল। ওই সময় অবস্থান নিশ্চিত হয়ে মামার বাসা থেকে বনিকে আটক করা হয়।

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0078649520874023