কুমিল্লা লাকসাম সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক আবাসন সোসাইটি নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। খিলা আজিজ উল্লাহ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন।
সোমবার স্কুল লাইব্রেরীতে তদন্ত শুরু করেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রসাদ কুমার ভাওয়াল।
জানা যায়, লাকসাম সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আবদুল মাবুদ ২০১১ সালে লাকসাম, নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ ও মনোহরগঞ্জ ৪ উপজেলার ১২০ শিক্ষক নিয়ে শিক্ষকদের কল্যাণে শিক্ষক আবাসন সোসাইটি গড়ে তোলেন। ওই আবাসন সোসাইটিতে ভর্তি ফি জনপ্রতি ছিল ৩শ’ টাকা এবং মাসিক চাঁদা ১ হাজার টাকা। শিক্ষক আবাসন সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফেজ মাওলানা আবদুল মাবুদ, সদর দক্ষিণ উপজেলার পরতী মাদরাসার অধ্যাপক মাও. আবদুর রাজ্জাক এমডি ও বড়বাম মাদরাসা শিক্ষক মাও. রুহুল আমিনকে ক্যাশিয়ার করে ৯ সদস্যের কার্যকরী কমিটি গঠন করেন। ইসলামী ব্যাংক লাকসাম শাখায় ওই সোসাইটির নামে একটি হিসাব খোলেন। উক্ত ব্যাংক হিসাবে কোন টাকা জমা করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। নরপাটি হাইস্কুলের শিক্ষক শাহ আলম জানান, ওই সোসাইটির টাকা দিয়ে চেয়ারম্যান নিজের নামে সম্পত্তি বায়না করে জমির ব্যবসা করেন। শিক্ষক আবাসন সোসাইটির মাধ্যমে সদস্যদের প্লট দেয়ার কথা থাকলেও কোন প্লট না দিয়ে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। আমি শিক্ষক আবাসন সোসাইটিতে ৫৪ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। কিন্তু ১০ বছরে আমি আমার জমাকৃত টাকা ফেরত পাইনি। জমাকৃত টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক সুলতান আহমদ ফয়েজ উল্লাহ, আবুল বাশার, আহম্মদ উল্লাহ, নুর মোহাম্মদ, মাহবুবুল হক, জোসনা আক্তার, কাজী মোজাম্মেলসহ অনেক শিক্ষক জানান, আমরা সোসাইটির সদস্য হয়ে টাকা জমা দিয়েছি। সদস্যদের প্লট দেয়ার কথা ছিল। প্লটও দেননি এবং আমাদের টাকা ফেরত দেননি।
খিলা আজিজ উল্লাহ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন মজুমদার জানান, ওই সোসাইটি ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমি রশিদের মাধ্যমে ৪১ হাজার ৮শ’ টাকা জমা দেই। গত ১০ বছরেও আমি কোন প্লট পাইনি এবং আমি আমার টাকা ফেরত পাইনি।
এই ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রসাদ কুমার ভাওয়াল জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদনের দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।