ঝালকাঠির বাউকাঠি বিন্দুবাসিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ মো. দেলোয়ার হোসেনকে প্রতিষ্ঠানের ৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার (২৯ অক্টোবর) সভাপতি মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন।
সৈয়দ দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দে বাউকাঠি বিন্দুবাসিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদানের পর নানা অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন। ছুটি ছাড়াই তিনি বেশিরভাগ সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ম্যানেজিং কমিটি পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি বিদ্যালয়ের ক্যাশবই পরীক্ষা করে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পান। প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন জনতা ব্যাংকের ঝালকাঠি স্টেশন রোড শাখায় ০৬৯০৩১০০১৫৪৮৫ নং হিসাব থেকে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৫ টাকা উত্তোলন করে বিদ্যালয়ে কোন খরচের হিসাব না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। একই ব্যাংকের ০৬০৯০৩১০০২১১৫৬ নম্বর হিসাব থেকে ৫৬ হাজার টাকাও উত্তোলন করেন তিনি। মো. আমজাদ আলী নামে একজনকে অস্থায়ী দাতা সদস্য করে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে টিউশন ফি বাবদ ৪৮ হাজার টাকা এবং ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের নামে ৪৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত মোট ১৮ দিন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য ভর্তি থাকলেও তিনি ২৮ জুন হাজিরা খাতায় সই করে বিদ্যালয়ে উপস্থিত দেখান।
এ ছাড়া সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন বিদ্যালয়ের পুকুর এবং নারিকেল গাছ লিজ দিয়ে টাকা বিদ্যালয়ে জমা না দিয়ে নিজে নিয়ে নেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন একজন সার্টিফিকেটধারী অযোগ্য শিক্ষক। তিনি যোগ দেওয়ার পর এসএসসির পাসের হার কমে গেছে। ২০০১ খ্রিস্টাব্দে রাজনৈতিক প্রভাবে ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে নিয়োগ লাভ করেন।
তবে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বিদ্যালয়টিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। বরখাস্তের বিরুদ্ধে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলেও তিনি জানান।