কুমিল্লায় যথা সময়ে ক্যাপিটেশনের ভাতার টাকা না পেয়ে ১০ সহাস্রাধিক বেসরকারি এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা চরম বিপাকে পড়েছেন। জেলার ১৭ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থাপিত ২৪৪টি বেসরকারী ক্যাপিটেশন প্রাপ্ত এতিমখানায় গত অর্ধ বছরের বরাদ্দকৃত ভাতা এখনো আসেনি। ডিসেম্বর মাসের শেষ নাগাদ বরাদ্দ পাওয়ার কথা থাকলেও সমাজ সেবা অধিদফতরের গড়িমসি এবং নানা জটিলতার কারণে এখনো বরাদ্দের টাকা পায়নি এতিমখানাগুলো।
এদিকে এসব এতিমখানার পরিচালকরা বিভিন্ন দোকান থেকে বাকিতে পণ্য এনে যথা সময়ে টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ওইসব দোকানীরা পন্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে এসব এতিমখানার শিক্ষার্থী অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
জানা যায়, সারাদেশে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনভুক্ত ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ড প্রাপ্ত ৪ হাজার বেসরকারি এতিমখানা রয়েছে। এসব এতিমখানায় ৮৮ হাজার এতিম এবং ৩-৪ লাখ দুস্থ অসহায় শিক্ষার্থী রয়েছে। সরকারী বিধি অনুয়ায়ী বছরে দুদফা ক্যাপিটেশনের ভাতা দেয়া হয়। গত ডিসেম্বর মাসে অর্ধ বছরের ভাতার চেক দেয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে দেড় মাস পেরিয়ে গেছে। এখনো ভাতার চেক পায়নি কোন এতিমখানা কর্তৃপক্ষ।
এতে সারাদেশের মতো কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ২৪৪টি বে-সরকারি এতিমখানার প্রায় ৪ হাজার ৮৯০ জন এতিমসহ প্রায় ১০ হাজার দুস্থ ও অসহায় শিক্ষার্থী চরম বিপাকে পড়েছে। যথা সময়ে ভাতার চেক না পেয়ে এমিতমখানার পরিচালক এবং তত্ত্বাবধায়করা সমাজসেবা অধিদফতরের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
মুরাদনগর উপজেলার রহিমপুর হেজাজিয়া এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদরাসার তত্ত্বাবধায়ক হাফেজ কাজী লোকমান জানান, ওই প্রতিষ্ঠানে এতিম ও দুস্থ মিলিয়ে ২৮০ জন শিক্ষার্থী ও ১৪ জন শিক্ষক ও ৪ জন বাবুর্চি রয়েছে। সমাজ সেবা কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে চেক প্রদান না করে তাহলে প্রতিষ্ঠানটির নিবাসীরা বিপর্যয়ের মাধ্যে পড়বে।
এ বিষয়ে জেলা সমাজ সেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি জানি যথা সময়ে ভাতা না পেয়ে এতিমখানার শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তারা বেকায়দায় আছেন। বছরে দুইবার বরাদ্দের পরিবর্তে ৪ দফায় বরাদ্দ প্রদানের জন্য আমরা মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করব’।