গত ২ জুলাই থেকে অনলাইনে ক্লাস শুরু করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক সহকারী অধ্যাপক জানালেন, তিনি জুম এ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন। তিনটি বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন তিনি। প্রথমবর্ষে তার কোর্সে ৮০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ক্লাসে অংশ নেন মাত্র ৩৪ জন।
এর মধ্যে এই শ্রেণীর ১৫ শিক্ষার্থীর অনলাইনে ক্লাস করার মতো যন্ত্রই (ডিভাইস) নেই। তৃতীয় বর্ষে ৮৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩২ জন অংশ নেন। আর স্নাতকোত্তরে ৭০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জন অংশ নেন। যারা ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন, মূলত সবাই মুঠোফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করেন। এছাড়া বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর বাড়ি প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের অনেকের নেই ল্যাপটপ কিংবা স্মার্টফোন।
ইন্টারনেটের গতি নিয়ে সমস্যা আছে। এছাড়া ডাটা প্যাকেজ কিনতে যে টাকার প্রয়োজন তা বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়। ফলে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশকে অনলাইন ক্লাসের বাইরে থাকতে হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত জুম এ্যাপ ব্যবহার করেই অনলাইনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দেয়া তথ্য বলছে, ডিভাইস ও ইন্টারনেট খরচের সমস্যার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা অনেক শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট সংযোগেরও সমস্যা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি অবনতির সঙ্গে ছুটিও বাড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। এ অবস্থায় ২৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক সভায় অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কয়েকজন শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে অনলাইন ক্লাস নিলেও তাতে শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল না। তবে প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর অংশগ্রহণ বাড়লেও পরে তা বিশ্ববিদ্যালয়টির অনলাইন ক্লাসে নেই অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী।
নিয়মিত ক্লাস করা শিক্ষার্থীদের দেয়া তথ্য মতে, অনলাইন ক্লাসে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীর পরিমাণ গড়ে ৫০ শতাংশেরও কম। দু-একটি বিভাগের কোন কোন বর্ষের ক্লাসে উপস্থিতি ৬০ শতাংশ বা এর কিছু বেশি। আবার কিছু কিছু বিভাগের ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৩০ শতাংশেরও কম।
ক্লাসে অংশ নিতে না পারা শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের বেশির ভাগের বাড়ি প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের অনেকের নেই ল্যাপটপ কিংবা স্মার্টফোন। ইন্টারনেটের গতি নিয়ে সমস্যা আছে। এছাড়া ডাটা প্যাকেজ কিনতে যে টাকার প্রয়োজন তা বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়। ফলে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশকে অনলাইন ক্লাসের বাইরে থাকতে হচ্ছে। তবে যে ক্লাসগুলো নেয়া হচ্ছে, এর ভিডিও রেকর্ড কিংবা লেকচার ফেসবুকে আপলোড করার কথা থাকলেও আপলোড করা হচ্ছে না।