আগ্রহ আয়োজনে সংকট পাঠাভ্যাসে - দৈনিকশিক্ষা

আগ্রহ আয়োজনে সংকট পাঠাভ্যাসে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

গ্রন্থমেলার অর্জন শত, প্রয়োজন বহুমুখী আর দায়বদ্ধতা অতীত ও ভবিষ্যত্ উভয় প্রজন্মের কাছে। মুজিবশতবর্ষে রাজকীয় আয়োজনের গ্রন্থমেলায় দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। শুধু লেখক-প্রকাশক-পাঠকের জন্য এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ নয়, সংস্কৃতির জন্য সমানভাবে অর্থপূর্ণ। বই বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতেও একুশে গ্রন্থমেলার বিকল্প নেই। বই যখন কিন্ডল, সেলফোন বা নোটবুকের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে তখন হার্ড কাভারের বাঁধাইয়ের বই নিয়ে মাসব্যাপী মেলার আয়োজন আমাদের বড়ো অর্জন। এর পেছনে যেমন আছেন আয়োজকরা তেমনি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিজ্ঞাপণদাতা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা, সহজ ক্রয়ের প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি)  ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে  এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, সংকটটাও তৈরি হচ্ছে তাতেই। প্রকাশক থেকে পাঠক, আয়োজক থেকে লেখক সকলেরই নানারকম সামাজিক দায় বাড়ছে। এমনকি খোদ রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তে কখনো কখনো এমন লেখক ও বইকে তুলে ধরা হচ্ছে, যা পাঠকের রুচি তৈরির দায়বদ্ধতাকে খর্ব করে। সম্প্রতি কয়েকটি পুরস্কারে এমন লেখকদের নাম উঠে আসায় সে আলোচনা আরো স্পষ্ট। এ প্রসঙ্গে আলেকজান্দার সোলঝেনিিসন বলেছিলেন, For a country to have a great writer is like having a second government.That is why no regime has ever loved great writers, only minor ones. এ কথার সঙ্গে পুরোপুরি সহমত পোষণ না করলেও সম্পূর্ণ দ্বিমত হওয়া যায় না। মেলায় আসা সমৃদ্ধ পাঠকের মুখেও তাই কখনো শুনতে হয়, বাংলা ভাষার আধুনিক সাহিত্যের জনক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষা তাদের কাছে সংস্কৃত মনে হয়! সাহিত্যের আকর গ্রন্থগুলো উপেক্ষা করে সাম্প্রতিক সময়ের পাঠ সম্পন্ন হতে পারে না।

বই বিক্রি সংখ্যার কাছে নতজানু হচ্ছে পাঠের মাপটা। যত বই কিনে বাড়ি ফেরা হয়, তার অধিকাংশ সামাজিক সম্পর্ক রক্ষার তাগিদ। সাধারণ সাহিত্য এভাবে হয়ে উঠছে অসাধারণ, যা সামগ্রিকভাবে আঘাত করছে সংস্কৃতিতে। স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে পরিচিতজনকে বিব্রত করে ধরে নিয়ে বই কেনানোর দায়িত্বটা লেখকের নয়। অথচ এ কাজটাই আমরা এখন করছি। সংখ্যাধিক্যের আরেকটি ক্ষতির দিক, প্রচারণায় পুরোনো ভালো বইয়ের ঠাঁই না হওয়া। বিগত মেলায় প্রকাশিত ‘অসাধারণ উপন্যাস’ আর এ মেলায় ডিসপ্লেতে নেই। ফলে এক বছর পরই প্রমাণ হচ্ছে ওটা আদতে ‘অসাধারণ’ ছিল না। তাই মেলা নিয়ে ভাবতে গেলে মনে হয়, বহিরাবরণের আয়োজনের কাছে মান হারাচ্ছে মূল উদ্দেশ্য।

তবে এত খামতির পরও আমাদের ভালোবাসার জায়গা, প্রাণের টান বইমেলা। জীবনের প্রথম বই হাতে নিয়ে বিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তরুণ লেখক, নিরাপত্তারক্ষীর দৃষ্টি এড়িয়ে ঢুকে যাওয়া ফুলবিক্রেতা শিশুর বিস্ময়ের দৃষ্টি ধরা পড়ে আলোকচিত্রীর কাছে। অটোগ্রাফ দিতে কেঁপে যাওয়া হাতের কলম ফেরত যায় না পকেটে, দুজনের খুচরো টাকা মিলিয়ে কেনা হয় আরো একটি পছন্দের বই। পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এক পাশে আর হুইল চেয়ারে বসে থাকা পাঠকের আগ্রহ মেটাতে বিক্রেতা ঝুঁকে এগিয়ে দেন দুটো বই। এসব আবেগও আমাদের বাংলা সাহিত্যেরই সম্পদ।

 

 সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম, লেখক ও সাংবাদিক

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034761428833008