আজ পহেলা ফাল্গুন - দৈনিকশিক্ষা

আজ পহেলা ফাল্গুন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আজ ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। পহেলা ফাল্গুন। বসন্ত মানে পূর্ণতা। বসন্ত মানে নতুন প্রাণের কলরব। পাতার আড়ালে আবডালে লুকিয়ে থাকা বসন্তের দূত কোকিলের মধুর কুহুকুহু ডাক, প্রকৃতির সবুজ অঙ্গন ছেয়ে যাবে রঙিন ফুলে ফুলে। মাঘের শেষ দিক থেকেই গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল।

বসন্তের স্পর্শে জেগে উঠেছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, নাগলিঙ্গম। বাতাসে ভেসে আসা ফুলের গন্ধে বসন্ত জানিয়ে দিচ্ছে, সত্যি সত্যি সে ঋতুর রাজা। মন তাই গেয়ে উঠবে ‘ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে/ ডালে ডালে ফুলে ফুলে পাতায় পাতায় রে..........’।

বাঙালির জীবনে বসন্তের উপস্থিতি অনাদিকাল থেকেই। কবিতা, গান, নৃত্য আর চিত্রকলায় আছে বসন্তের বন্দনা। সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শনেও বসন্ত ঠাঁই করে নিয়েছে তার আপন মহিমায়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে আধুনিককালের বাউল কবির মনকেও বারবার দুলিয়েছে ঋতুরাজ বসন্ত।

বসন্ত শুধু অশোক-পলাশ-শিমুলেই উচ্ছ্বাসের রং ছড়ায় না, আমাদের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহীদদের রক্তরঙিন পুষ্পিত রক্তের স্মৃতির ওপরও রং ছড়ায়। বায়ান্ন সালের আট ফাল্গুন বা একুশের পলাশরাঙা দিনের সঙ্গে তারুণ্যের সাহসী উচ্ছ্বাস আর বাধভাঙা আবেগের জোয়ার যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে।

বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনকে পালন করি ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে। এ উৎসব এখন পরিণত হয়েছে বাঙালির নিজস্ব সার্বজনীন প্রাণের উৎসবে। বসন্তের প্রথম মুহূর্তকে ধরে রাখতে তাইতো সবাই মেতে ওঠে নানা উৎসব ও সাজে। বাসন্তী রঙের শাড়িতে বাঙালি নারীকে অপরূপ দেখায়। এতে পিছিয়ে নেই পুরুষেরাও।

বসন্ত অনেক ফুলের বাহারে সজ্জিত হলেও গাঁদা ফুলের রঙকেই এদিনে তাদের পোশাকে ধারণ করে তরুণ-তরুণীরা। খোঁপায় শোভা পায় গাঁদা ফুলের মালা। বসন্তের আনন্দযজ্ঞ থেকে বাদ যায় না গ্রাম্যজীবনও। আমের মুকুলের সৌরভে আর পিঠাপুলির মৌতাতে গ্রামে বসন্তের আমেজ একটু বেশিই ধরা পড়ে। বসন্তকে তারা বরণ করে আরও নিবিড়ভাবে।

বাংলায় বসন্ত উৎসব এখন প্রাণের উৎসবে পরিণত হলেও এর শুরুর একটা ঐতিহ্যময় ইতিহাস আছে, যা অনেকের অজানা। মোগল সম্রাট আকবর প্রথম বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেন ১৫৮৫ সালে। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বসন্ত উৎসব।

তখন অবশ্য ঋতুর নাম এবং উৎসবের ধরনটা এখনকার মতো ছিল না। কিন্তু অন্য ঋতুর চেয়ে এই ঋতুকে পালন করা হতো আলাদাভাবে। তাই পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব কেবল উৎসবে মেতে ওঠার সময় নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য, বাঙালিসত্তা।

সে ঐতিহ্যের ইতিহাসকে ধরে রাখতে পারলেই বসন্ত উৎসবের সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রজন্ম ছড়িয়ে দিতে পারবে বাঙালি চেতনাকে। বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। এছাড়া তরুণ-তরুণীরা বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শাহবাগ, চারুকলা চত্বর, পাবলিক লাইব্রেরি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ধানমন্ডি লেক, বলধা গার্ডেন মাতিয়ে রাখবে সারাদিন।

ফোন, ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলবে বসন্তের শুভেচ্ছা বিনিময়। আজ দিনভর চলবে বসন্ত বন্দনায়। প্রতিবছরের মতো এবারেও জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষৎ এর উদ্যোগে ঢাকা শহরে বিভিন্ন মঞ্চে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ বকুল তলায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু হবে সকালে। এছাড়াও শিল্পকলা একাডেমী, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন বসন্তবরণে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058951377868652