ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জাতীয়তাবাদ এবং বাঙালিয়ানার জোয়ার এসেছিল। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেরও অন্যতম প্রেরণা ’৫২-র ভাষা আন্দোলন। সেই ভাষাসংগ্রামীদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন, আমাদের আজও আলোর পথ দেখাচ্ছেন তাদের মধ্যে আহমদ রফিক অন্যতম। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তিনি যেমন রাজপথে নেমেছিলেন তেমনি নিজের লেখনি দিয়ে সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে প্রচুর গবেষণা করেছেন। লিখেছেন অজস গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ। দু’হাত ভরে লিখে চলেছেন ছোটদের জন্যও। আজ আহমদ রফিকের ৯০তম জন্মদিন। ভাষাসংগ্রামী ও গবেষক আহমদ রফিকের নব্বইতম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে আজ আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ বিকাল ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে তার ভক্ত-অনুরাগীরা শুভেচ্ছা জানাবেন। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম। আহমদ রফিক ভাষাসংগ্রামীদের তালিকা প্রস্তুতে দীর্ঘদিন কাজ করে যাচ্ছেন। সেটা সরকারি এবং নিজ উদ্যোগ দু’ভাবেই। চলতি বছরে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পরিতাপের সঙ্গে বলেছিলেন এই তালিকা আর তৈরি করা সম্ভব নয়।
ভাষা আন্দোলন নিয়ে সাহিত্যকর্মের কথা বলতে গিয়ে আহমদ রফিক বলেছিলেন, ‘আমার একটা আক্ষেপ, ভাষা আন্দোলন নিয়ে অনেক কবিতা লেখা হয়েছে, কিন্তু একটি মহৎ উপন্যাস তৈরি হয়নি। এটি বিস্ময়কর।’
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের আজকের এ দিনে তৎকালীণ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার মেঘনাপাড়ের শাহবাজপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আহমদ রফিক। তার পিতা আবদুল হামিদ, মাতা রহিমা খাতুন। লেখালেখির আহমদ রফিক জন্য পেয়েছেন অফুরান শ্রদ্ধা ভালোবাসাসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। বাংলা একাডেমি পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার ও অগ্রণী ব্যাংক শিল্পসাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে একুশে পদক পান। ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে টেগোর রিসার্চ ইন্সটিটিউট তাকে রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য উপাধিতে ভূষিত করে।