হুমাত্রিক ও প্রথাবিরোধী লেখক, গবেষক ও ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার। ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট জার্মানির মিউনিখ শহরে তিনি মারা যান। এর আগে ওই বছর একুশে বইমেলায় হুমায়ুন আজাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়। মূলত গবেষক ও প্রাবন্ধিক হলেও হুমায়ুন আজাদ নব্বইয়ের দশকে একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন আজাদ। ১৯৬২ সালে রাঢ়িখাল স্যার জে সি বোস ইনস্টিটিউশন থেকে পাকিস্তানের মধ্যে ১৮তম স্থান অধিকার করে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে ১৯৬৭ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৮ সালে
স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রির জন্য হুমায়ুন আজাদ নোয়াম চমস্কি উদ্ভাবিত রূপান্তরমূলক সৃষ্টিশীল ব্যাকরণ তত্ত্বের কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে বাংলা ভাষার বাক্যতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করেন। এর মাধ্যমে বাংলার ভাষাবিষয়ক গবেষণায় আধুনিক ভাষাবৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সূত্রপাত ঘটে।
হুমায়ুন আজাদ সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সৃষ্টি করেছেন ভিন্ন ধারা। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'অলৌকিক ইস্টিমার' প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। পরবর্তী সময়ে কাব্যগ্রন্থ 'জ্বলো চিতাবাঘ', 'সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে', আমি বেঁচেছিলাম অন্যদের সময়ে'র মাধ্যমে কবিতাপ্রেমীদের দৃষ্টি কাড়েন এবং অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। তার প্রথম উপন্যাস 'ছাপান্ন হাজার বর্গমাইল' আলোড়ন তোলে এবং বিপুল সমাদৃত হয়। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রবন্ধের বই 'নারী'। বইটি প্রকাশের পর তিনি মৌলবাদীদের তীব্র রোষানলে পড়েন।