আজ ৪ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে উঠছে ঝকঝকে ৩৫ কোটি বই - দৈনিকশিক্ষা

আজ ৪ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে উঠছে ঝকঝকে ৩৫ কোটি বই

নিজস্ব প্রতিবেদক |

হাতে গোনা কয়েকটি দেশ বাদ দিলে অনেক দেশের জনসংখ্যাও নেই চার কোটি। অথচ বছরের প্রথম দিনই আজ দেশের প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সাড়ে চার কোটি স্কুল শিক্ষার্থীর হাতে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ নতুন ঝকঝকে পাঠ্যবই তুলে দিয়ে ইংরেজী নববর্ষ শুরু করবে বাংলাদেশ। আয়োজন ঘিরে রাজধানীসহ দেশজুড়ে স্কুলে স্কুলে উদযাপিত হবে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’। উৎসবের আবহে বছরের প্রথম দিন খালি হাতে স্কুলে এসে হাতে পাবে বিনামূল্যের ঝকঝকে নতুন বই। রাজধানী থেকে শুরু করে উৎসব চলবে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামের স্কুলে স্কুলে।

এদিকে সরকারের যুগান্তকারী এ কর্মযজ্ঞের হিসাব বলছে, গত বছরের চেয়ে এবার ১০ লাখ ৭০ হাজার ৯৬৬ শিক্ষার্থী বেড়েছে। ফলে এবার ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৯ বই বেশি ছাপা হয়েছে। গেল আট বছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে ২২৫ কোটি ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৭৫০ বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। আজ নতুন বছরের প্রথম দিন ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২ বই মিলিয়ে মোট ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ এক হাজার ৯১২ বই বিতরণ করতে যাচ্ছে সরকার। আজ সকাল দশটায় আজিমপুর গবর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উৎসবের উদ্বোধন করবেন। এই উৎসবে রাজধানীর কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেবে। এনসিটিবির আয়োজনে এ উৎসবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আলমগীর, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা উপস্থিত থাকবেন। অন্যদিকে একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। এই অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আসিফ-উজ-জামান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল উপস্থিত থাকবেন।

শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের চার কোটি ৪২ লাখ ৪ হাজার ১৯৭ শিক্ষার্থীর দোরগড়ায় পৌঁছে গেছে বিনামূল্যের ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২ বই। উপজেলা ও স্কুলপর্যায়ে পৌঁছে গেছে বইয়ের শতভাগ। আজ দেশজুড়ে সূচনা হবে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের। সপ্তাহব্যাপী উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থী পাবে বিনামূল্যের ঝকঝকে নতুন বই। এ নিয়ে টানা নবম বারেরর মতো বছরের প্রথম দিন প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যের বই দিতে যাচ্ছে সরকার।

এর আগে রীতি অনুসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকাল দশটায় গণভবনে কয়েক শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছিলেন। আজ থেকে দুই মন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করবেন সারাদেশের বই উৎসবের। গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ভালভাবে বই বিতরণ নিশ্চিত করতে ছাপা হয়েছে চাহিদার তুলনায় অন্তত ৫ শতাংশ বেশি বই। কোথাও সঙ্কট দেখা দিলে অতিরিক্ত এ বই সেখানে সরবরাহ করা হবে।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেছেন, শতভাগ বই পৌঁছে গেছে। বছরের প্রথম দিন ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে উৎসবের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে। ওই দিন দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই উৎসবের মাধ্যমে বই বিতরণ করা হবে।

এবার প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন করে শিক্ষা উপকরণ দেয়া হবে না জানিয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, গত বছর ওইসব শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে, যা বিদ্যালয়েই রাখা হয়। শুধু পাঠদানের সময় ওইসব উপকরণ ব্যবহৃত হয় বলে প্রতি বছর বিতরণের প্রয়োজন নেই।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের চেয়ে এবার ১০ লাখ ৭০ হাজার ৯৬৬ শিক্ষার্থী বেড়েছে। ফলে এবার ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৯ বই বেশি ছাপা হয়েছে। গেল আট বছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে ২২৫ কোটি ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৭৫০ বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। নতুন বছরের প্রথম দিন ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২ বই মিলিয়ে মোট ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ এক হাজার ৯১২ বই বিতরণ করতে যাচ্ছে সরকার।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলছিলেন, শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো বই তুলে দেয়াটা ছিল চ্যালেঞ্জ। এ জন্য শুরু থেকেই এনসিটিবি, বইয়ের মনিটরিংয়ে থাকা দুটি পরিদর্শন টিম, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর ছিল। শুরুতে নানা জটিলতা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের আগেই ছাপানোর কাজ শেষ হয়েছে।

এদিকে সরকারের এ বিশাল কর্মযজ্ঞের তথ্য দেখলেই স্পষ্ট হয় প্রায় প্রতিবছরই বেড়েছে বিনামূল্যের বইয়ের সংখ্যা। দু‘একবার সামান্য কমলেও তার পরিমাণও ছিল বিশাল। ২০১০ সালে ১৯ কোটি ৯০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৬১ কপি, ২০১১ সালে ২৩ কোটি ২২ লাখ ২১ হাজার ২৩৪ কপি, ২০১২ সালে ২২ কোটি ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৩ কপি, ২০১৩ সালে ২৬ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ১০৬ কপি, ২০১৪ সালে ৩১ কোটি ৭৭ লাখ ২৫ হাজার ৫২৬ কপি, ২০১৫ সালে ৩২ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৩ কপি, ২০১৬ সালে ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭২ কপি, গেল বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে বই ছিল ৩৬ কোটি ২১, লাখ ৮২ হাজার ২৪৫ কপি। আর এবার নতুন বছরে বইয়ের সংখ্যা ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২ কপি।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনোই ছাত্রছাত্রী যেমন পায়নি বিনামূল্যের বই তেমনি বছরের প্রথম দিনও পাঠ্যবই হাতে পায়নি। বরং তা পেতে পেতে মার্চ/ এপ্রিল পার হয়ে যেতো প্রতিবছর। আর এই সুযোগে পাঠ্যবই নিয়ে অসাধু সিন্ডিকেট অস্থির করে তুলত বইয়ের বাজার। মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রথমবারের মতো ২০১০ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের দুই কোটি ৭৬ লাখ ৬২ হাজার ৫২৯ শিক্ষার্থীকে ১৯ কোটির অধিক বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল। পরে একটি বিশেষ মহল এনসিটিবির গুদামে আগুন লাগিয়ে দেয়। শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ২০১১ ও ২০১২ সালে বইয়ের সংখ্যা ২৩ কোটিতে উন্নীত করতে হয়। পরের বছর প্রায় ২৭ কোটি। এরপর পর্যাক্রমে বইয়ের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ কোটি।

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042569637298584