মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) চতুর্থ শ্রেণির ৮৫০ জন কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া আট বছরেও শেষ করা যায়নি। শুরুতে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের কারণে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ছিল। তবে এখন আটকে আছে মামলার কারণে। ২৯টি মামলা চলছে আদালতে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম সিদ্দিক অবশ্য বলেন, লিখিত, মৌখিক পরীক্ষা শেষে তালিকাও চূড়ান্ত হয়েছে। যেহেতু মামলা চলমান রয়েছে। এ কারণে নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। তবে মামলা স্থগিত করার জন্য আইনি কার্যক্রম চলছে। এ কর্মকর্তা আরো জানান, চতুর্থ শ্রেণির ৮৫০ জন কর্মচারী নিয়োগ হওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। অন্য পদগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
মাউশির তত্কালীন মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমান-উর-রশিদ ২০১০ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে কয়েকটি সংবাদপত্রে নিয়োগের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তবে প্রক্রিয়া শেষ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিতে সময় ক্ষেপণ করেন মাউশির তত্কালীন শীর্ষ কর্তারা। সারাদেশের স্কুল-কলেজে শূন্য পদ পূরণে এ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রতিনিয়ত অনেক কর্মচারী অবসরে যাচ্ছেন। আট বছর ধরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে থাকায় সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ শিক্ষা বিভাগে কর্মচারী সংকট দিন দিন বাড়ছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির এক হাজার ৯৬৫টি শূন্যপদে নিয়োগ দিতে ২০১২ সালের ৯ মার্চ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাউশি। ২০১৩ সালের ১৪ ও ২১ জুন দুই ধাপে নেওয়া হয় ওই নিয়োগ পরীক্ষা। ওই বছরই ফল প্রকাশের কথা ছিল। তবে মাউশি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। লিখিত কোনো প্রমাণ না থাকলেও প্রতিটি পদের বিপরীতে কমপক্ষে ৪ লাখ থেকে শুরু করে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়ার অভিযোগ উঠে। মাউশি সংশ্লিষ্ট একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ টাকা সংগ্রহ ও ভাগ-বাটোয়ারা হয়। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশে তোড়জোড় চালানো হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় আপত্তি জানায়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্দেশে তা স্থগিত রাখা হয় এবং তদন্ত কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।
পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির মধ্যে একাধিকবার চিঠি চালাচালি শেষে পুনরায় ওই নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গত বছর জুলাই থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। ফলও চূড়ান্ত হয়। তবে ফল প্রকাশের আগেই মামলা ঠুকে দেন দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করা চতুর্থ শ্রেণির অস্থায়ী কর্মচারীরা।
মাউশির আইন কর্মকর্তা আল আমিন সরকার বলেন, জনবল সংকটের কারণে বিভিন্ন সরকারি স্কুল ও কলেজে স্থানীয়ভাবে ওই কর্মচারীদের নিয়োগ করা হয়েছিল। তারা আদালতে রিট করেন।
সৌজন্যে: ইত্তেফাক