দুইহাতে দেদার খরচ করার পরও প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা অলস পড়ে আছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে। বছরের পর বছর এই টাকা পড়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বেতন-ভাতা দেয়ার পরও এই টাকা অলসভাবে পড়ে রয়েছে। অথচ এই টাকার পুরোটাই লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণ ও পরীক্ষা ফি, জরিমানা ও ভর্তিসহ নানা খাতে আদায় করা।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষক ৮৪ জন, কর্মকর্তা ৫৫৪ জন ও ৬১০ জন কর্মচারী রয়েছেন। জানা যায়, অলস পড়ে থাকা টাকার পরিমান তিন হাজার কোটির মতো ছিলো কয়েক বছর আগেও। প্রতিবছরই তা নতুন নতুন খাত তৈরি করে খরচ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ সরকারের কাছে দেয়া হিসেবে যদিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উল্রেখ করেছে যে তাদের ফান্ডে দুই হাজার দুইশ ৩২ কোটি টাকা রয়েছে।
দেশে স্নাতক পর্যায়ের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৪৮ শতাংশই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে পড়াশোনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি-বেসরকারি কলেজের সংখ্যা ২ হাজার ১৫৪টি। এগুলোতে শিক্ষার্থী রয়েছেন প্রায় ২১ লাখ। এর মধ্যে ২৭৯টি সরকারি কলেজে শিক্ষার্থী ১৩ লাখের বেশি। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয় ৫৫৭টি কলেজে।
এ বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর জন্য প্রশ্ন প্রণয়ন, খাতা দেখা, ফল প্রকাশ, ফরম পূরণ ও ভর্তির কাজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফি, ফরমপূরণের ফি, বিলম্ব ফিয়ের জরিমানা, ভর্তির ফি, ভর্তি বাতিলের ফি বাবাদ বিপুল পরিমান টাকা জমা হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে। অভিযোগ রয়েছে প্রতিবছর কেনাকাটাসহ বিভিন্নখাতে অপচয় হয় কোটি কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক প্রযুক্তির দায়িত্ব জামাতপন্থি একজন কর্মকর্তার হাতে। তার একজন আত্মীয়ের নামে খোলা একটি কম্পানি থেকে আইটির সব মালামাল কেনারও অভিযোগ রয়েছে।
জানতে চাইল অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের নেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অনার্স-মাস্টর্স শিক্ষকরা বছরের পর বছর ননএমপিও। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারে না থাকলেও এমপিওর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে টেলিফোন করেন। এতে সান্তনা পান ননএমপিও হাজার হাজার শিক্ষক। বাস্তবে এমপিওভুক্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের সুপারিশ আমলে নেয়না মন্ত্রণালয়। তবু, নতুন কলেজের অনুমতি দেয়া আর শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে নিজেদের প্রতিনিধি দেয়া অব্যাহত রাখছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ননএমপিও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অলস টাকা থেকে কিছু দেয়ার দাবি করেন হাবিবুর।