‘চার বোনের একমাত্র ভাই রাব্বি। আমাদের ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না। তাকে অনেক আদর-ভালোবাসা দিয়ে আমরা মানুষ করেছি। আজ সেই আদরের ভাইকে খুন করলো ঘাতকরা। আমার ভাইয়ের কারো সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছিল না। কিন্তু কেন তাকে হত্যা করা হলো।
এই হত্যার বিচার চাই আমরা।’ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নিহত রাব্বির বোন মানসুরা পারভীন মনা। নিহত রাব্বির আরেক বোন মৌমিতা পারভীন জানান, তারা চার বোন এক ভাই। সবার ছোট ছিল
রাব্বি। চার বোনের তিনজনই স্কুল শিক্ষক। অন্য এক বোন ও সবার ছোট রাব্বি এখনো পড়াশোনা করছে। মৌমিতা বলেন, আগের দিন সোমবার তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে রাব্বির কথা হয়। ওইদিন রাব্বি বোনকে জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬ টা ২০ মিনিটের ট্রেনে সে বাড়িতে ফিরবে।
প্রতিবেশি ও সহপাঠি রিপন মাহন্তের সঙ্গে তিনি বাড়িতে ফিরবেন। কিন্তু মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে তিনি যখন ভাইকে ফোন দেন, তখন জানতে পারেন রাব্বিকে কে বা কারা বাড়ি ফেরার পথেই রাস্তায় কুপিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু কেন তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে তা তিনি কিছুই জানেন না। খবর পেয়ে পরে পরিবারের লোকজন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।
রাব্বির সহপাঠি রিপন মাহন্ত দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, ‘বাড়িতে যাওয়ার জন্য আগের দিনই মোবাইলে কথা হয় রাব্বির সঙ্গে। এর ৪/৫ দিন আগে রাব্বি নগরীর ঝাউতলা এলাকার একটি মেসে থাকা রিপনের সঙ্গে দেখা করে একসঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বিষয়টি ঠিক করে আসে। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাব্বিকে ফোন দেন রিপন মহান্ত। কিন্তু রাব্বি আর ফোন ধরছিলো না। শেষে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে পুলিশ ফোন রিসিভ করে ঘটনাস্থলে রিপনকে ডেকে নেয়।
এদিকে কলেজছাত্র রাব্বি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে রাজশাহী সিটি কলেজের অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ শেখ দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, ‘রাব্বি মেধাবী শিক্ষার্থী। তার সঙ্গে কারো ঝামেলা আছে বলে জানা নাই। কিন্তু কেন তাকে এভাবে খুন করা হলো ভাবতেই শরীর শিউরে উঠছে।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মাহাবুব আলম দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, মামলার তদন্ত চলছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভোর ছয়টার দিকে রাজশাহী নগরের হেতেমখাঁ ও বর্ণালি মোড়ের মাঝামাঝি সড়ক থেকে ফারদিন আশারিয়া রাব্বি (২২) হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পরে পুলিশ রাব্বির মরদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গ নিয়ে যায়।