দীর্ঘ ১৪ বছর পর কলেজেমুখী হতে পারছেন অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। তিনি বাগেরহাট মোরেলগঞ্জের মাতৃভাষা কলেজের অধ্যক্ষ। ১৪ বছর আগে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী পরিবারের সন্তান হওয়ায় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে তাকে অপসারণ করা হয়েছিল। সম্প্রতি উচ্চ আদালতের মামলার রায় নজরুল ইসলামের পক্ষে আসায় কর্মক্ষেত্রে ফেরার সুযোগ তৈরি হলো বর্ষীয়ান এই শিক্ষকের।
সংবাদ সম্মেলনে এ খবরটি দেয়ার সময় অঝোরে কেঁদেছেন কলেজ অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। মামলার জাঁতাকলে পড়ে তার কর্মজীবন থেকে এতগুলো বছর হারিয়ে গেছে। ইচ্ছা থাকলেও তার পক্ষে কলেজমুখী হওয়া সম্ভব ছিল না। বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের একক বেঞ্চ গত বুধবার মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বাগেরহাট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখা হয়।
অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে শরণখোলার মাতৃভাষা কলেজে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি কাজ শুরু করেন। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে এনে সাময়িক বরখাস্ত করে কমিটি। এক পর্যায়ে কমিটির পক্ষ হয়ে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের দুটিসহ ৪টি মামলা দায়ের করেন জাহাঙ্গীর হোসেন মুন্সি।
সে সময় যশোর বোর্ড কর্তৃপক্ষ নজরুল ইসলামকে অধ্যক্ষ পদে বহালের নির্দেশ দেয়। কমিটির পক্ষ হয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন মুন্সি এ নির্দেশের বিরুদ্ধেও আদালতে মামলা দায়ের করেন। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে বাগেরহাট সাব জজ আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন, যা নজরুল ইসলামের পক্ষে যায়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন বাদী জাহাঙ্গীর মুন্সি।
উচ্চ আদালতের বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের একক বেঞ্চ আপিলে রায়ে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে। অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, বাগেরহাট ও ঢাকায় আদালতের বারান্দায় কেটে গেছে তার ১৪টি বছর। সংসার চলে এখন স্বজনদের সহযোগিতায়। চাকরির বয়স আছে আর মাত্র ১ বছর। আদালতের রায় পেলেও সামনের একটি বছর অধ্যক্ষের চেয়ারে বসতে পারবেন কি না সাংবাদিকদের কাছে এমন প্রশ্ন রেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।